হ্যাগলি ওভালের উইকেট যেমন হবে

হ্যাগলি ওভালের কিউরেটর রোভার বউল‘তুমি কি আমার বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের জন্যে এখানে বিশেষ ফাঁদ তৈরি করছ রোভার?’- সকালবেলা ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে মাঠের বাইরে রোভারকে প্রথম এ প্রশ্নটিই জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছিল!

কিন্তু ভদ্রতা বলে কথা। মাঠে নিজের কর্মী বাহিনী নিয়ে উইকেটে ‘তুলির শেষ আঁচড়’ দেওয়ায় ব্যস্ত ছিলেন হ্যাগলি ওভালের প্রধান কিউরেটর রোভাল বউল। মাঠের ভেতরে আমাদের ঢুকতে মানা। ইশারায় ডাকতেই ভদ্রলোকের মতো তিনি কাজ ফেলে চলে এলেন মাঠের বাইরে। হাসিখুশি মুখ। নিজের থেকে জিজ্ঞেস করলেন কী জানতে চাও বলো।

একটি শব্দে জবাব দিলাম- উইকেট। রোভার হেসে ফেললেন। বুঝতে পারেন মিডিয়ার চাহিদা; বললেন, ‘তেমন কিছু না। আমরা ঐতিহ্যগতভাবে যেমন পেস সহায়ক উইকেট বানাই এটিও তেমন একটি। এক কথায় স্পোর্টিং উইকেট। উইকেটে যথেষ্ট বাউন্স থাকবে। তবে এ নিয়ে আমরা যত কেরামতিই করি না কেন সত্যিকার অর্থে ম্যাচের প্রথম দিনেই এসব ঠিকমতো কাজ করে। পেসাররা এখানে ভালো সুবিধা পান।’

ব্যাটসম্যানদের জন্য বড় বিপদ হতে পারে এ উইকেট, ‘বিভ্রান্ত হয়ে ব্যাটসম্যানরা অনেক শট খেলে বসলে বিপদ পড়েন। আমাদের এসব উইকেটে সাধারণত যে দল টস জেতে তারা বল হাতে নেয়। কারণ মূলত বোলাররাই বেশি সুবিধা পান প্রথম দিন। এরপর থেকে বদলাতে থাকে উইকেট। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে অথবা দ্বিতীয় সেশন থেকে উইকেটে সুবিধা পেতে শুরু করেন ব্যাটসম্যানরা। সে কারণে এ উইকেটে প্রথম দিন যারা টিকে থাকে তাদের থামানো কঠিন।’

রোভার ধারণা দিলেন তার উইকেট ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভের মতোই হবে। তবে হয়তো প্রথম দিকে কিছুটা ঘাস থাকবে। রোভার কী তার সব গোপনীয়তা প্রতিপক্ষ দেশের সাংবাদিকদের বলে দিয়েছেন? এমন সহজ সরল সবকিছু ভাবাটা নিশ্চয় বুদ্ধিমানের কাজ না। কথায় কথায় বলেন আমরা জানি তোমাদের দেশে তোমরা স্পিন সহায়ক উইকেট বানাও। তোমাদের দলে ভালো কিছু স্পিন বোলারও আছে। তবে প্রথম দিন না তারা এখানে সুবিধা পেতে পারেন প্রথম দিনের পরে।

কথায় কথায় বৃষ্টি বাড়লে বিদায় নিয়ে মাঠের দিকে ছুটে গেলেন রোভার। তার ইশারা পেয়ে বৃষ্টির ঝাপটা থেকে তাদের কষ্টের জমিন রক্ষায় একদল উইকেট ঢাকতে শুরু করে। যন্ত্রে আলতো মাঠ খুঁড়তে খুঁড়তে গরগর শব্দ করে আমাদের সামনে দিয়ে চলে যায় একটি যন্ত্রযান। বৃষ্টির পানি যাতে মাঠে বা ঘাসে জমে না থাকে সরাসরি মাটি ফুঁড়ে ভেতর চলে যায় এ ব্যবস্থা সে জন্যে। বৃষ্টি এবং বাতাসের সঙ্গে যুত করে চলে এভাবেই রোভার বাহিনী ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালের উইকেট তৈরি করছে তা বাংলাদেশের জন্যে ফাঁদ হবে না আর্শীবাদ হবে তা জানা শুরু হবে শুক্রবার সকালে।

প্রথম টেস্ট উপলক্ষে ওয়েলিংটনে পা রেখেই শুনেছিলাম, ‘বাংলাদেশ দলের সঙ্গে টেস্ট? এতো তিন দিনেই শেষ হয়ে যাবে।’ ক্রাইস্টচার্চ এসেও একই আওয়াজ শুনছি। ওয়েলিংটন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের চেহারা দেখে তাদের মুখের ছবিটা বদলে গিয়েছিল! ক্রাইস্টচার্চেও কী তাই হবে? জবাব মিলবে শুক্রবার।

/এফএইচএম/