‘সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই’

সাইবার সিকিউরিটি ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে বক্তারা

সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে সবার আগে দরকার সচেতনতা। আর এজন্য সচেতন করতে হবে শহর থেকে গ্রামের সব বয়সের মানুষকে। ‘সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস-২০১৬’ উপলক্ষে শনিবার রাজধানীতে আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন বক্তারা।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস (সিসিএ) ফাউন্ডেশন এ সেমিনারের আয়োজন করে। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত সেমিনারটির বিষয় ছিল ‘সাইবার নিরাপত্তা: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’।   

সংগঠনের উপদেষ্টা তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সুফি ফারুক ইবনে আবুবকরের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব (আইসিটি) সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার। মূল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান নাগরিক মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. এম পান্না। কী-নোট উপস্থাপন করেন ইনফরমেশন সিস্টেমস অডিট অ্যান্ড কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের (আই-সাকা) ঢাকা চ্যাপ্টার  প্রেসিডেন্ট একেএম নজরুল হায়দার। 

অনুষ্ঠানে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত মেরিল্যান্ড ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. এম পান্না বলেন, “ইন্টারনেট ব্যবহার করতে স্টপ, থিংক, কানেক্ট—এ বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে। অর্থাৎ ইন্টারনেটে কোনো আকর্ষণীয় পোস্ট দেখলেও তাতে ক্লিক করার আগে থামতে হবে, তারপর ভাবুন বিষয়টি আসলে কী এবং এরপর নিরাপদ মনে হলে সেটিতে ক্লিক করুন বা সেটির সঙ্গে সংযুক্ত হোন।”  এ ধরনের সচেতনা তৈরি করতে হবে এবং এটি দরকার সব ক্ষেত্রে। 

আই-সাকা ঢাকা চ্যাপ্টার প্রেসিডেন্ট একেএম নজরুল হায়দার বলেন, আমাদের দেশে সচেতনতা তৈরিতে নেতৃত্বের অভাব। তিনি বলেন, সাইবার হামলা অনেকটা ভূমিকম্পের মতো। এটি হলে যেমন আমরা কিছুই করতে পারি না। কিন্তু পরে ঘুরে দাঁড়াবার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারি। তিনি বলেন, সাইবার হামলা এখন সারা পৃথিবীরই মাথা ব্যথার কারণ। তাই আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্য রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের দাবি তুলে বলেন এই আইনের কারণে কোনও সংবাদ অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশ হলে এক ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান আবার সেই একই সংবাদ কাগজের পত্রিকায় প্রকাশ হলে আরেক ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। তাই এই আইনটি বাতিল বা এর সংশোধন জরুরি হয়ে পড়েছে।   

সিসিএ ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব ও প্রধান সমন্বয়ক কাজী মুস্তাফিজ জানান, সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস অক্টোবর। তাই মাসব্যাপী তারা নানা কর্মসূচি নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে সচেতনতামূলক পোস্টার ডিজাইন প্রতিযোগিতা, গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে সাইবার সচেতনতা তৈরিতে কর্মশালা, বিভিন্ন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি ইত্যাদি। 

প্রসঙ্গত ২০০৪ সাল থেকে আমেরিকা, ২০১১ থেকে নরওয়ে এবং ২০১২ থেকে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশ এ মাসকে ‘সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস’ হিসেবে পালন করছে। সাইবার দস্যুতা থেকে নিরাপদে থাকতে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি নেওয়া হয় এ মাসে।  এ বছর বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো এটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে সিসিএ ফাউন্ডেশন।

 

/টিএন/