সুপার কম্পিউটার যুগে যাচ্ছে বাংলাদেশ

অতিথিদের সঙ্গে বিজয়ী তিনটি দলনানা ধরনের গবেষণায় তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণের জন্য দেশে দীর্ঘদিন ধরে সুপার কম্পিউটারের অভাব অনভূত হচ্ছে। সেই অভাব পূরণে সরকার এবার উদ্যোগী হয়েছে। সুপার কম্পিউটার যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার সেই ঘোষণা দিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

এদিন রাজধানীর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ই্উনিভার্সিটি মিলনায়তনে ন্যাশনাল গার্লস প্রোগ্রামিং কনটেস্টের সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে গিয়ে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, নানা ধরনের তথ্যপ্রযুক্তি গবেষণা বেগবান করতে বাংলাদেশে সুপার কম্পিউটার স্থাপনের ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। এর ফলে গবেষণালব্ধ ফল দেশেই তৈরির মাধ্যমে নিরীক্ষা করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে আজকে যারা প্রোগ্রামিংয়ে ভালো করছে তাদের জন্য কাজের ক্ষেত্র তৈরি হবে।

পলক বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য দরকার নারী-পুরুষের যৌথ অবদান। আইসিটি শিল্পে বর্তমানে মাত্র ১২ শতাংশ। আমরা চাই ২০৩০ সালের মধ্যে অন্যান্য খাতের মতো তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও নারী এবং পুরুষের সমতা হবে। নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য সরকারের আইসিটি বিভাগ বিভিন্ন আয়োজন করছে।

এবারের ন্যাশনাল গার্লস প্রোগ্রামিং কনটেস্ট-২০১৭ প্রতিযোগিতায় সারাদেশের ৭৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১১৭টি দল নির্বাচিত হয়। এর মধ্যে ১০২টি দল চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিয়েছে। এর থেকে ১৫টি দলের মোট ৪৫ জন অংশগ্রহণকারীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। বিজয়ীদের জন্য আগামী ১৭ থেকে ২০ মে ঢাকায় আবাসিক ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে।

বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। প্রতিযোগিতায় ৭টি সমস্যার মধ্যে ৬টি সমস্যার সমাধান করে চ্যাম্পিয়ন হয় চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) চুয়েট ডায়মন্ড অ্যান্ড রাস্ট দল। ৬টি সমস্যার সমাধান করে প্রথম রানার আপ হয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির এনএসইউ লা লা ল্যান্ড দল। ৫টি সমস্যার সমাধান করে দ্বিতীয় রানার আপ হয় চুয়েট গার্লস আর পার্লস। বিজয়ী দলকে ৫০ হাজার টাকা, প্রথম রানার আপ ৩০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় রানার আপ দলকে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়া সেরা ১০টি দলকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়। বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ব্র্যাকু_টিএসপি, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি স্কুলের আরইউ স্কুল পোলারাইজ এবং ঢাকা সিটি কলেজের ‌ডিসিসি ফ্লেমিং গার্লস।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ই্উনিভার্সিটির উপচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ এম ইসলাম।

বিজয়ী প্রোগ্রামাররা

বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, বাংলাদেশে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রোগ্রামিংয়ের আন্তর্জাতিক নানা আয়োজনে আমাদের সফলতাও রয়েছে। এর ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য বিশেষ করে মেয়েদের আরও এগিয়ে আসতে হবে যাতে করে বাংলাদেশের মেধাবী মেয়েরা আন্তর্জাতিক ভাবেও সফলতা দেখাতে পারে।

প্রতিযোগিতার সহযোগী আয়োজক ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ই্উনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ আখতার হোসেন জানান, ‌২০১৫ সাল থেকে শুরু হওয়া এই আয়োজন এরই মধ্যে আইসিটি পড়ুয়া মেয়েদের মধ্যে যথেষ্ঠ আগ্রহ সৃষ্টি করেছে যা আশাব্যঞ্জক।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জীন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী, আইসিটি বিভাগের উপসচিব মাহবুবা পান্না, বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সহ-সভাপতি লাফিফা জামাল, সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসানসহ অনেকে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আয়োজনে বাস্তবায়ন সহযোগী হিসেবে বিডিওএসএন ও জাজিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে রয়েছে কোড মার্শাল।
/এইচএএইচ/