র‍্যানসমওয়্যার প্রতিরোধে করণীয়

nonameবিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া কম্পিউটার ম্যালওয়্যারে বাংলাদেশেও ব্যক্তিগত কম্পিউটার আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ম্যালওয়্যার র‍্যানসমওয়্যার থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহারকারীদের সর্তক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া বাংলাদেশ সাইবার ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম (সিআইআরটি ডটগভ ডটবিডি) ম্যালওয়্যার র‍্যানসমওয়্যার থেকে রক্ষা পেতে করণীয় সম্পর্কে নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রকাশ করেছে।

র‌্যানসমওয়্যার হামলার শিকার হওয়া ব্যক্তিরা নিজেরাই যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে তথ্য দিয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞদের। সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ক্রাইম রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৩০টিরও বেশি কম্পিউটার এ ধরনের হামলার শিকার হয়েছে।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার র‍্যানসমওয়্যার বিষয়ে টেলিযোগাযোগ বিভাগে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

সোমবার রাতে এ বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথা বলেন ক্রাইম রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা তানভির হাসান জোহা। তিনি বলেন, ‘রবিবার (১৪ মে) পর্যন্ত ৩০টির মতো অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এই সংখ্যা আজ আরও বেড়েছে। ব্যক্তিগত কম্পিউটারের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও টেলিভিশন চ্যানেল আক্রান্ত হওয়ার খবরও পাওয়া যাচ্ছে।’

সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ই-জেনারেশন লিমিটেডের সাইবার স্পেশালিস্ট তামজীদ রহমান বলেন, ‘ব্যক্তিগত কম্পিউটারে র‌্যানসমওয়্যার শিকার হওয়া ব্যক্তিরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে এখনও বড় ধরনের নেটওয়ার্কে হামলার কোনও খবর পাওয়া যায়নি।’

এদিকে, সরকারি কোনও প্রতিষ্ঠানেও এখনও র‌্যানসমওয়্যার হামলার খবর পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের।

সিআইআরটি ডটগভ ডটবিডি তাদের ওয়েবসাইটে র‌্যানসমওয়্যার থেকে সুরক্ষিত থাকার পরামর্শ তুলে ধরেছে। র‌্যানসমওয়্যারের প্রাথমিক লক্ষ্য, মাইক্রোসফটের অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজচালিত কম্পিউটারগুলোকে অ্যাটাক করা যাতে এমএস ১৭-০১০ প্যাচ দেওয়া নেই। সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক করণীয় প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, মাইক্রোসফটের অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজচালিত কম্পিউটারে এমএস ১৭-০১০ প্যাচ দিয়ে হালনাগাদ করে নেওয়া।

সাধারণত কম্পিউটার ব্যবহারকারী যদি কোনও স্প্যাম ইমেইল থেকে কোনও সন্দেহজনক ওয়েবসাইট অথবা অ্যাটাচ ডকুমেন্টে ক্লিক করেন, তবে র‌্যানসমওয়্যার আক্রান্ত হতে পারেন। ফলে আক্রান্ত কম্পিউটারের ফাইলে প্রবেশ করা যাবে না। ফাইলে ঢুকতে অর্থ দাবি করা হচ্ছে। র‌্যানসমওয়্যার ম্যালওয়ারটি নেটওয়ার্কে যুক্ত অন্য উইন্ডোজ  সিস্টেম স্ক্যান করে এবং যে সিস্টেমে এমএস ১৭-০১০ প্যাচ দেওয়া নেই সেই সিস্টেমকেও সংক্রমিত করে।

নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ডেটা রেগুলার ব্যাকআপ নেওয়া এবং নিরাপদে অন্য স্থানে সংরক্ষণ করা।  উইন্ডোজ সিস্টেমে এমএস ১৭-০১০ প্যাচ হালনাগাদ করা। সব সময় উইন্ডোজ আপডেট রাখা এবং অপরিচিত কিংবা সন্দেহজনক ওয়েবসাইটে ক্লিক না করা।

নিরাপত্তা প্রসঙ্গে সাইবার স্পেশালিস্ট তামজীদ রহমান বলেন, র‍্যানসমওয়্যারে কম্পিউটার আক্রান্ত হলে দেখা যাবে কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভের সব ফাইল এনক্রিপ্ট  হয়ে গেছে এবং সেটি খুলতে অর্থ দাবি করা হচ্ছে। এজন্য,উইন্ডোজ সিস্টেম আপটেড রাখা এবং  সিকিউরিটি সফটওয়্যার ব্যবহার করা নিরাপদ। একইসঙ্গে অপরিচিত মেইলে সংযুক্ত  ফাইল খোলা ও ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ ফাইলের ব্যাকআপ রাখলে ঝুঁকিমুক্ত থাকা সম্ভব।

/সিএ/এমপি/