কল সেন্টারে বইছে সুবাতাস, আসছে আরও ১৮টি প্রতিষ্ঠান

কল সেন্টার খাতে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। করোনাকালের ধাক্কা সামলে এই খাত আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দেশ, বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কাজ আসতে শুরু করেছে। এই খাতের অবস্থা ভালো হওয়ায় আরও নতুন ১৮টি প্রতিষ্ঠানের (ডমেস্টিক ও আন্তর্জাতিক নিবন্ধন সনদ) অনুকূলে একটি করে কল সেন্টার রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে কল সেন্টারের সংখ্যা ২২১টি। এরমধ্যে প্রায়ে সবক’টিই চালু রয়েছে। ১৪টি কল সেন্টারের লাইসেন্স নবায়ন সংক্রান্ত জটিলতা ছিল। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি ১৪টি প্রতিষ্ঠানের কল সেন্টার রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নবায়নের বিষয়ে অবহিত হয়েছে। বিষয়টির সুরাহা হয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী।

অপরদিকে দেশে কল সেন্টার খাতের ক্রমশ উন্নতির ফলে এবং নতুন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসির সর্বশেষ কমিশন বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কমিশন বিষয়টি অবহিত হয়েছে। এ খাত (কল সেন্টার) নতুন আরও ১৮টি প্রতিষ্ঠান পেতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কল সেন্টার ও আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাক্কোর মহাসচিব তৌহিদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এই খাতে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান আসাকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখি। এটাই প্রমাণ করে যে এই খাতে সুদিন ফিরেছে, সুবাতাস বইছে। তিনি আরও বলেন, করোনার ধাক্কা আমরা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। ব্যবসা স্থিতিশীল হয়েছে। তিনি জানান, করোনাকালে কোনও কল সেন্টার বন্ধ হয়নি। বরং ওই সময়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান (১৪টি) নিবন্ধন নবায়ন করতে পারেনি। সেসব প্রতিষ্ঠানের কিছু সমস্যা হয়েছিল। সেই সমস্যাও দূর হয়েছে বলে জেনেছি। প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবন্ধন নবায়নের জটিলতা কেটেছে।

তৌহিদ হোসেন আরও জানান, করোনার সময় মানুষ ভার্চুয়াল মাধ্যমে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। ফলে অনেক কিছুই এখন অনলাইন নির্ভর। এ কারণে কল সেন্টারের চাহিদা বেড়েছে। এ খাতের লোকজন কল সেন্টারে সিট (এজেন্ট বা কর্মী) বাড়াচ্ছে, দিন-রাতের পালায় কর্মঘণ্টা ভাগের সংখ্যা বাড়ছে, ফলে খাতটাও দিন দিন বড় হচ্ছে।

খাত সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রথমবারের করোনার ধাক্কায় কল সেন্টারগুলো কোনও মতে টিকে থেকে সেবা দিয়ে গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন থাকায় কাজ আসার পরিমাণ কমে গিয়েছিল। কখনও কখনও তা শূন্যের কোঠায় নেমে গিয়েছিল। দ্বিতীয়বারের ধাক্কায় কল সেন্টারগুলো ৬০ শতাংশ কাজ হারায় (স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাত দিয়েই সংকটকালে টিকেছিল)।  সেখান থেকে এই খাত আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে ৮০ শতাংশের বেশি কাজ ফিরে পেয়েছে। কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান শতভাগেরও বেশি কাজ ফিরে পেয়েছে। নতুন নতুন কাজ এসেছে। বাজারও বেড়েছে। নতুন দেশ থেকেও কাজ আসতে শুরু করেছে বলে বাক্কো সূত্রে জানা গেছে। 

খাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, করোনাকালে স্বাস্থ্য খাতে কল সেন্টারে সেবা প্রত্যাশীদের চাহিদা বেড়েছে। অপরদিকে পর্যটন খাতের অবস্থা ভয়াবহ ছিল। সেই খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। হোটেল বুকিংয়ের জন্য কল সেন্টারে এখন প্রচুর কোয়েরি আসছে। শুক্র ও শনিবার সবাই বেড়াতে যেতে চান। কিন্তু হোটেল তো খালি নেই। কোয়েরির সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। ফলে সব মিলিয়ে এই খাতে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে।