গুগল ম্যাপের অন্দরের খবর

কোনও লোকেশন দেখার পাশাপাশি রাস্তার ট্রাফিক আপডেট দেখার কাজটিও এখন গুগল ম্যাপের সাহায্য নিয়ে করা হয়। একবার ভেবে দেখুন তো, গুগল কীভাবে এই আপডেট দেয়। গুগল কী আসলেই সব দেশের রাস্তার ওপর ক্যামেরা বসিয়ে রেখেছে, যা লাইভ মনিটরিং হচ্ছে? নাকি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মনিটর করা হচ্ছে। ব্যাপারগুলো একটু ভাবলে গোলকধাঁধার মধ্যে পড়তে হয়।

সাধারণ মানুষের মতো যদি চিন্তা করি, গুগলের কাজ গুগল করুক আমার অত ভেবে কাজ কি। আমি ফ্রি ফ্রি লাইভ ট্রাফিক আপডেট পাচ্ছি। যদি বলা হয়, গুগল এই ট্রাফিক আপডেটের কাজে আপনাকে, আমাকে এবং সব অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহারকারীকে ব্যবহার করছে। আসলে গুগল একটি অ্যালগোরিদম ব্যবহার করে যেখানে একটি নির্দিষ্ট এলাকার কাছাকাছি থাকা মোবাইলগুলোর গতি পর্যালোচনা করে। এর জন্য মোবাইলের জিপিএস সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।

আপনি নিশ্চয় দেখেছেন, যখন গুগল ম্যাপে আপনার অবস্থান জানতে চান তখন সেটি নিখুঁতভাবে আপনার অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এখানেও ব্যাপারটি এরকম। একই রাস্তায় থাকা সব অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল থেকে ডাটা সংগ্রহ করে অর্থাৎ ডিভাইসটি থেমে আছে নাকি চলন্ত অবস্থায় আছে, কী গতিতে এগুচ্ছে ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে তার ভিত্তিতে ম্যাপে লাল সবুজ সংকেত দিয়ে ট্রাফিক আপডেট দেখায়। গুগলের এ ব্যাপারটি আঁচ করতে পেরেছিলেন শিল্পী সাইমন ওয়েকার্ট। তিনি কয়েক বছর আগে জার্মানির বার্লিনে এক বিক্ষোভ অনুষ্ঠানে একটি অস্বাভাবিক ব্যাপার খেয়াল করেছিলেন। সেখানে রাস্তায় অনেক মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছিল, কিন্তু মজার ব্যাপার হলো রাস্তায় মানুষ ছাড়া কোনও গাড়ি ছিল না। সেখানে গুগল ম্যাপে রাস্তাটিতে লাল সংকেত মানে ট্রাফিক জ্যাম দেখাচ্ছিল।

সাইমন ওয়েকার্ট সন্দেহ করেছিলেন গুগল ম্যাপ এমন কিছু ব্যবহার করে যেখানে হয়তো মোবাইল ফোনগুলো ব্যবহার করা হয়। তিনি পরিকল্পনা করেন, যদি এরকম কিছু আবার ঘটে তাহলে ব্যাপারটি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে। তিনি তার বন্ধু ও দোকান থেকে ৯৯টি পুরনো মোবাইল ফোন সংগ্রহ করে তা দিয়ে একটি গুগল ম্যাপে একইভাবে একটি মিথ্যা ট্রাফিক জ্যাম তৈরি করতে পেরেছিলেন। তিনি সব মোবাইল একটি ওয়াগনের মধ্যে নিয়ে রাস্তায় হেঁটে বেড়িয়েছিলেন আর তখন গুগল ম্যাপ ওই রাস্তাগুলোতে লাল সংকেত দিয়ে ট্রাফিক জ্যাম দেখাচ্ছিল আর বাস্তবে পুরো রাস্তাটাই ফাঁকা ছিল। এভাবে তিনি গুগলকে বোকা বানিয়ে গুগল ম্যাপের আসল সত্যিটি সবার সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই লিংকে গেলে ভিডিও দেখা যাবে।