টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম গ্র্যান্ড ফিনালে

কৃষিখাতে বৈষম্য দূর করবে সামীন আলমের ‘অ্যাগ্রিম্যাচ’

এশিয়া অঞ্চলে চাল সরবরাহে বৈষম্য দূরীকরণে ‘২০১৮-২০১৯ টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম’ এর বিজয়ী হয়েছে অ্যাগ্রিম্যাচ। ‘অ্যাগ্রিম্যাচ’ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনটি এমনভাবে উন্নয়ন করা হয়েছে, যেখানে ভৌগোলিক অবস্থান ব্যবহার করে কৃষক ও মধ্যস্থতাকারীরা যোগাযোগ করবে। বিজয়ী হিসেবে অ্যাগ্রিম্যাচ ১৫ হাজার মার্কিন ডলার সিডফান্ড জিতে নিয়েছে। 

PR_Photo 2_GP_TYF Finale Winner_Bangladesh

২৮ মে ব্যাংককে ডিট্যাকের প্রধান কার্যালয়ে টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের ২০১৮-২০১৯ কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘটে। আটটি দেশের ১৬ তরুণ টেলিনর গ্রুপ ও ডিট্যাকের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের সামনে ডিজিটাল সেবা নিয়ে তাদের ধারণা উপস্থাপন করেন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন ডিট্যাকের প্রধান নির্বাহী আলেক্সান্দ্রা রাইখ, টেলিনর গ্রুপের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার আনা কারিন এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল, ইউনিসেফ ও নোবেল পিস সেন্টারের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞগণ। 

গত বছরের ডিসেম্বরে নোবেল পিস প্রাইজ সপ্তাহে এ বছরের টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম শুরু হয়। যেখানে ১৬ জন প্রতিনিধি চারটি দলে বিভক্ত হয়ে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান নিয়ে প্রতিযোগিতা করে। এখান থেকে অংশগ্রহণকারীরা তাদের ধারণার উন্নয়ন শুরু করে পর্যায়ক্রমে সেবার প্রোটোটাইপ তৈরি এবং ব্যবহারকারীদের নিয়ে গবেষণা করে, যা পরিশেষে তাদের ব্যাংককে অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়। ৫ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে ২০-২৮ বছর বয়সী ১৬ জন বিজয়ী তরুণ ২০১৮-২০১৯ কার্যক্রমে তাদের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায়। 

অ্যাগ্রিম্যাচ দলে ছিল বাংলাদেশের সামীন আলম, মালয়েশিয়ার র‍্যাচেল লো, নরওয়ের এমিলি উনায়েস এবং ডেনমার্কের ইনগ্রিদ রাসমুসেন। এ দলের জন্য প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন টেলিনর রিসার্চের ভিপি আইয়েভা মার্টিনকেনাইট।

খাদ্য উৎপাদনে টেকসই সমাধান এবং সুযোগ বৃদ্ধিতে ডিজিটাল সমাধান নিয়ে আসাই ছিলো এ দলের চ্যালেঞ্জ। এ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে কৃষক এবং মধ্যস্ততাকারী নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করবে ও পণ্যের দাম নির্ধারণ করতে পারবে। কাজের উন্নয়নে ছয় মাসের নিরলস প্রচেষ্টা এবং চারটি দেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব করার মাধ্যমে দলটি টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের এ বছর বিজয়ী নির্বাচিত হয়েছে। অ্যাগ্রিম্যাচের মোবাইল সেবা কৃষিপণ্য সাপ্লাই চেইনে ভারসাম্য আনতে এবং ঋণ ও দারিদ্রের কষাঘাত থেকে কৃষককে মুক্ত করে তাদের ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদান রাখবে।  

অ্যাগ্রিম্যাচ মিয়ানমারে তাদের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালায়। কারণ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এ বছরের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী মূল আয়ের জন্য দেশটির জনসংখ্যার ৭০ ভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল।

টেলিনর গ্রুপের ইভিপি এবং চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার আনা কোয়াম বলেন, ‘টেলিনরের বৈশ্বিক বিস্তৃতি, মান ও আমাদের দক্ষতা ব্যবহার করে অসাম্য দূরীকরণে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। প্রযুক্তি ও আমাদের কার্যক্রম থাকা সকল দেশের তরুণদের একসাথে করার মাধ্যমে টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের মাধ্যমেও আমরা এটাই করতে চেয়েছি। অ্যাগ্রিম্যাচের সম্ভাবনায় আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে এবং আমাদের প্রত্যাশা তারা দ্রুতই এম-অ্যাগ্রি সল্যুশন নিয়ে আসবে।’ 

বিচারকদের সামনে উপস্থাপিত অন্য তিনটি ধারণা হলো- মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অবহেলা দূরীকরণে ডিজিটাল সমাধান, বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের সুযোগ বৃদ্ধিতে ডিজিটাল পোর্টাল এবং তরুণ প্রজন্মের সাথে আগের প্রজন্মের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা শেয়ারিংয়ের প্ল্যাটফর্ম।  

মেধাবী তরুণরা একসাথে কাজের মাধ্যমে বৈষম্য দূর করবে, এ ধারণার ওপর ভিত্তি করেই গড়ে তোলা হয়েছে বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম ‘টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম’ নোবেল পিস সেন্টারের সহযোগিতায় সমাজের ক্ষমতায়নে ডিজিটাল সমাধান উন্নয়নে টেলিনর ইয়ুথ ফোরামে বিশ্বের নানা দেশ থেকে মেধাবী তরুণরা অংশগ্রহণ করে।