তারা কোরবানি দেন সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য

আসছে ঈদুল আজহা। এই ঈদের আসল আনন্দই হলো সবার মাঝে আনন্দ ভাগাভাগি করা। এই উদ্দেশ্যে সুবিধাবঞ্চিত ও দুর্যোগকবলিত মানুষদের পাশে থাকার জন্য দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে চলেছেন কিছু তরুণ।

IMG_8656
ফোরাম এসডিএ (ফোরাম ফর সোশ্যাল ডেভলোপমেন্ট অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) সংগঠনের কিছু স্বপ্নবাজ তরুণ ২০১৩ সাল থেকে কোরবানি ঈদের তৃতীয় দিনে সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের মাঝে ঈদের মাংস ও খাবার বিতরণের মাধ্যমে তাদের এই কার্যক্রম শুরু করেন। ২০১৩ সালে ঢাকায় স্বল্প পরিসরে  বিভিন্ন জায়গার পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন তারা। ২০১৪ সালে  সিরাজগঞ্জের দুখিয়াবাড়ি বন্যাকবলিত গ্রামে  নিজেরাই মাংস সংগ্রহ করে প্রায় ১২০০ গ্রামবাসীর মাঝে মাংস বিতরণ করেন। এবার খাবার বিতরণের পাশাপাশি গ্রামবাসীদের মধ্যে খেলাধুলার আয়োজন ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করে তারা।
সংঠনটির সাধারণ সম্পাদক রাফায়েত রোমান বলেন, ‘ ২০১৫ সালে আমরা বগুড়ার খাটিয়া মাটি চরের বন্যাকবলিত গ্রামে ২টি গরু কোরবানির দিয়েছিলাম। পুরো গ্রামজুড়ে কারোর সামর্থ ছিল না কোরবানি দেওয়ার।’ কীভাবে লোকেশন ঠিক করা হয় এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাফায়েত রোমান জানান, ঈদের আগে টিম ঠিক করা হয়। তারা বিভিন্ন লোকেশনের ঠিকানা দিলে নিজেরাই যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিতরণের আগের দিন লোকেশনে টোকেন বিতরণ করা হয়।
এই স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজগুলো ফোরাম এসডিএ’র সদস্যরা নিজেদের জমানো টাকা ও বিভিন্ন অনুদান হতে প্রাপ্ত অর্থ দিয়েই সম্পাদন করেন। ২০১৬ সালে গাইবান্ধার ফুলছড়িতে কোরবানি ঈদে ২টি গরু কোরবানি দেওয়া হয়েছিল বলে জানান রোমান। নদী ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে তারা কোরবানিসহ খাবার ও বিভিন্ন  রসদের যোগান দিয়েছেন।  ২০১৮ সালে  রংপুরের  তিস্তার  চরে ৩টি গরুর কোরবানি দিয়েছেন।
এ বছরের আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির মাংস ও প্রয়োজনীয় উপাদান বিতরণের সম্ভাব্য জেলা হতে পারে সিরাজগঞ্জ, রংপুর ও কুড়িগ্রাম। এবারের লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে রোমান বলেন, ‘এবার আমাদের লক্ষ্য কমপক্ষে ৫০০টি পরিবারে ঈদের খুশি পৌঁছে দেওয়া। এবার আমাদের ৬টি গরু কোরবানি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে  ঢাকার  রামপুরার একটি স্কুলে স্তন ক্যানসারের সচেতনতার মাধ্যমে ফোরাম এসডিএ’র কার্যক্রম শুরু হয়।  ২০১৩ সালে ঈদুল ফিতরে ঢাকার ১৩টি পয়েন্টে পথশিশুদের মাঝে খাবার, ঈদের সালামি, মেহেদি ও বিভিন্ন উপকরণ পৌঁছে দেয় ফোরাম এসডিএ।  তাছাড়া শীতকালে তীব্র শীতের এলাকাগুলোতে বিতরণ করা হয় শীতবস্ত্র।