X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

কমেছে শীতের সবজির দাম

গোলাম মওলা
২০ নভেম্বর ২০২০, ১৭:৫৭আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২০, ১৮:১৯

কাঁচাবাজার (ছবি: ফোকাসবাংলা) সয়াবিন তেলের বাড়লেও কমেছে শীতের শাকসবজির দাম। দীর্ঘদিন পর রাজধানীর বাজারগুলোতে শীতের সবজির দাম কমে আসায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের মধ্যে। বাজারে শীতের সবজি, বিশেষ করে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম ও মুলার সরবরাহ বেড়েছে। মূলত এ কারণেই সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। শুক্রবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় বেশ কিছু সবজির দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। সেই সঙ্গে কমেছে ডিমের দামও।

বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ বাড়ার কারণে সব ধরনের সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহে যে পালন শাক ৫০ টাকায় কিনতে হয়েছে, এ সপ্তাহে সেই পালন শাক ২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে আগের চেয়ে একটু বড় আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপি এসেছে। গত সপ্তাহে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মুলা এখন ২০ থেকে ৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

শুক্রবার রাজধানীর মানিকনগর, মগবাজার, সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর বাজার ও কাওরান বাজার ঘুরে  দেখা যায়, আগে ছোট আকারের প্রতি পিস ফুলকপির দাম ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা।  আজকে তার চেয়ে বড় অর্থাৎ মাঝারি আকারের একটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। দাম কমার তালিকার শীর্ষে রয়েছে শিম। এতদিন যে শিম প্রতি কেজি ১২০ টাকা ছিল, সেই শিম ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যেই বিক্রি হচ্ছে। ৭০ টাকার লাউও এখন প্রতিটি পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। দাম কমেছে পেঁয়াজেরও। বাজারে নতুন এসেছে কলিসহ পেঁয়াজ। এই পেঁয়াজের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে। আগের চেয়ে কমেছে কাঁচা মরিচের দামও। মানিকনগর বাজারে কাঁচা মরিচের কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। সেগুনবাগিচা বাজারে কাঁচা মরিচ প্রতি আড়াইশ’ গ্রাম ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কাওরান বাজারে শাকসবজির বিক্রেতা হাসিনুর ইসলাম বলেন, ‘বাজারে জিনিসপত্রের দাম অনেকটাই সস্তা। সব জিনিসের দাম কমেছে।’ দাম কেন কমছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘সরবরাহ ভালো, তাই কমতে শুরু করেছে।’ কিছু দিনের মধ্যেই সবজি, পেঁয়াজ ও আলুর দাম আরও কমে আসবে বলে জানান তিনি।

অবশ্য বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম এখনও প্রতি কেজি ৭০ টাকার আশপাশে। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা করে। মানিকনগর বাজারের খুচরা বিক্রেতা ইউসুল আলী বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা নিচে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।’ কারণ, পাইকারিতে তাদের প্রতি কেজি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে।

মানিকনগর এলাকার বাসিন্দা তোফাজ্জল আলী বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে সবজির দাম ছিল নাগালের বাইরে। আজ বাজার অনেকটাই ঠান্ডা । সব সবজির দামই কমেছে।’ তার ধারণা, নতুন ধান ও আলু-পেঁয়াজ বাজারে উঠলে দাম আরও কমে আসবে। তবে এই সপ্তাহে চাল-ডাল ও সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে বলে জানান  তিনি।

বাজারে  দেখা গেছে, বেশিরভাগ সবজি আগে যেখানে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় ছিল, এখন সেই সবজি  প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কোনও কোনও বাজারে তা ৪০ থেকে ৫০ টাকায় নেমে এসেছে।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে বরবটির দাম কেজিতে ২০ টাকা কমেছে। এখন প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা মধ্যে। গত সপ্তাহে বরবটির কেজি ছিল ৮০  থেকে ১০০ টাকা কেজি। ৮০ টাকা থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুনের দামও কমে ৪০ টাকা থেকে ৬০ টাকার মধ্যে চলে এসেছে। আর ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া উস্তা ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

দাম কমার এ তালিকায় রয়েছে— ঢেঁড়স, ঝিঙা, পটল, উস্তা ও কচুর লতি। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০ থেকে ৯০ টাকা। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা।

উস্তা ও ঝিঙা ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকার মধ্যে চলে এসেছে। যদিও গত সপ্তাহে  উস্তা ও ঝিঙার দাম প্রতি কেজি ৬০ টাকার ওপরে ছিল। ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি কচুর লতির দাম কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় নেমেছে।

অবশ্য আগের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে গাজর ও পাকা টমেটো। বাজার ও মানভেদে গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকায়। আর পাকা টমেটোর কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে নতুন আসা কাঁচা টমেটো ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

বাজারগুলোতে পুরনো আলু প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। নতুন আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা।

খোলা ভোজ্যতেলের দাম আরও বেড়েছে। কাওরান বাজারে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১০৫ টাকা ও পাম সুপার ৯৮ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।

এ প্রসঙ্গে মৌলভী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী গোলাম মাওলা বলেন, ‘শীতের মৌসুমে সয়াবিন তেলের চাহিদা বাড়ে, কিন্তু সরবরাহ বাড়ে না। এ কারণে দাম বাড়ে।’ তিনি বলেন, ‘শীতে সয়াবিন বা পাম তেল জমাট বেঁধে যায়। এ কারণে সরবরাহ কমে যায়।’

এদিকে বাজারে দেশি মাছের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে দামও কমেছে। একইভাবে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম কমে এখন এক ডজন ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের সপ্তাহের এই ডিমের দাম ছিল ১০০ থেকে ১০৫ টাকা ডজন।

সরু চালের দাম আবারও বেড়েছে। কাওরান বাজারে সরু মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৬০ টাকা এবং  নাজিরশাইল কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকা দরে বিক্রি হয়। মাঝারি মানের চাল প্রতি কেজি ৫২ থেকে ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য ভালো মানের মোটা চালের দাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে।

/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বিসিসিআইর গাইডলাইন অমান্য করেও শাস্তি পেলেন না জাদেজা
বিসিসিআইর গাইডলাইন অমান্য করেও শাস্তি পেলেন না জাদেজা
রাশিয়ার কাছে প্রথম স্বীকৃতি পেলো তালেবান
রাশিয়ার কাছে প্রথম স্বীকৃতি পেলো তালেবান
বরগুনায় ডেঙ্গুর প্রকোপ: হাসপাতালে নতুন ভর্তি ৮৬
বরগুনায় ডেঙ্গুর প্রকোপ: হাসপাতালে নতুন ভর্তি ৮৬
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জাতীয় নির্বাচন পেছানোর চক্রান্ত: বাংলাদেশ এলডিপি
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জাতীয় নির্বাচন পেছানোর চক্রান্ত: বাংলাদেশ এলডিপি
সর্বাধিক পঠিত
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
খেলাপিতে ধসে পড়ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান: বিপদে আমানতকারীরা
খেলাপিতে ধসে পড়ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান: বিপদে আমানতকারীরা
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল