শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত ১২টি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২২’ দেওয়া হচ্ছে। আগামী মঙ্গরবার (৩ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন পুরস্কারের জন্য নির্বাচিতদের হাতে স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট, টাকা ও সম্মাননা পত্র তুলে দেবেন।
রবিবার (১ অক্টোবর) শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখবেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে এবং শিল্প উদ্যোক্তা/প্রতিষ্ঠানকে শিল্পখাতের অবদানের স্বীকৃতি প্রদান, প্রণোদনা সৃষ্টি ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার দিচ্ছে। শিল্পসমৃদ্ধ উন্নত দেশ বিনির্মাণের জন্য বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, রফতানি ও আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন করে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে ভূমিকা রাখাসহ দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বেসরকারি খাতের অবদানকে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পুরস্কার দেওয়ার জন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বার্ষিক টার্নওভার, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন, স্থানীয় কাঁচামাল ব্যবহার, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, সামাজিক দায়িত্ব পালন, নিষ্কন্টক ভূমি ও ভূমির পরিকল্পিত ও দক্ষ ব্যবহার, পরিবেশ সংরক্ষণ প্রভৃতি ক্ষেত্রের অবদান বিবেচনা করা হয়েছে। পুরস্কারের জন্য শিল্প উদ্যোক্তা/শিল্প প্রতিষ্ঠান মনোনয়নে কয়েকটি নির্দিষ্ট যোগ্যতা ও শর্ত পূরণ আবশ্যক। এর মধ্যে শিল্প উদ্যোক্তা/শিল্প প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে স্থাপিত হতে হবে। শিল্প ক্ষেত্রে আবেদনকারী শিল্পপতি/উদ্যোক্তার সামগ্রিক অবদান সন্তোষজনক হতে হবে এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ বা আমদানি বিকল্প বা রফতানিমুখী পণ্য উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কার্যকর অবদান রাখতে হবে।
এছাড়া, নিয়মিত কর পরিশোধ করতে হবে। কোনও ফৌজদারি অপরাধের জন্য কোনও ট্রাইব্যুনাল বা আদালত থেকে ছয় মাস বা এর বেশি সময়ের জন্য কোনও উদ্যোক্তা/শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিককে দণ্ডিত করলে এবং দণ্ডভোগের পর ন্যূনতম দুই বছর সময় অতিক্রান্ত না হলে কিংবা তার বিরুদ্ধে কোনও ট্রাইব্যুনাল বা আদালতে এমন কোনও মামলা চলমান থাকলে, সেই শিল্প উদ্যোক্তা/শিল্প প্রতিষ্ঠান মনোনয়নের জন্য বিবেচনা করা হয়নি।
ঋণ খেলাপি, সরকারি বিল খেলাপি, কর খেলাপি, অর্থ পাচারকারী, সরকারি জায়গায় অবৈধ দখলদার ও পরিবেশ দূষণকারী শিল্প উদ্যোক্তা/শিল্প প্রতিষ্ঠানও এই সম্মানজনক পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয় না। উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কোনও প্রতিষ্ঠান একবার পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হলে, একই ক্যাটাগরিতে পরবর্তী তিন বছরের জন্য তার আবেদন বিবেচনা করা হয় না।
শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্বাচিত ১২ শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে দুটি, ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি, মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে একটি, কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে একটি এবং হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে দুটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এ বছর হস্ত ও কারু শিল্প ক্যাটাগরিতে কোনও প্রতিষ্ঠান মনোনিত হয়নি।
বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড, দ্বিতীয় হয়েছে জাবের এন্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড এবং তৃতীয় হয়েছে বিএসআরএম স্টিলস্ লিমিটেড।
মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে নিতা কোম্পানি লিমিটেড, দ্বিতীয় হয়েছে নোমান টেরি টাওয়াল মিলস্ লিমিটেড। ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে হযরত আমানত শাহ স্পিনিং মিলস্ লিমিটেড, দ্বিতীয় হয়েছে বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড এবং তৃতীয় হয়েছে টেকনো মিডিয়া লিমিটেড।
মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছে, গ্রিন জেনেসিস ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছে সামসুন্নাহার টেক্সটাইল মিলস্। হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং দ্বিতীয় হয়েছে সুপার স্টার ইলেক্ট্রিক্যাল এক্সেসরিজ লিমিটেড।
প্রথম পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা ও ২৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট, দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা ও ২০ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট এবং তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা ও ১৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট দেওয়া হচ্ছে। স্বর্ণের ক্রেস্টগুলো ১৮ ক্যারেট মানের স্বর্ণ দ্বারা নির্মিত। এছাড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত সবাইকেই সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে।
