জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির প্রতিবাদে রাজস্ব খাতে চলছে টানা কলমবিরতি। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব কাস্টম হাউস, কর ও ভ্যাট কার্যালয়ে কার্যত অচলাবস্থা বিরাজ করে। এতে আমদানি-বাণিজ্যসহ রাজস্ব আদায় কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
এদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ঢাকার আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়সহ বিমানবন্দর কাস্টমস, ঢাকা কর অঞ্চল-২, ১০, ১৬ ও ২৪, মুন্সিগঞ্জসহ আশপাশের ভ্যাট ও কর অফিসে কার্যক্রম বন্ধ ছিল। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন, পরীক্ষণ ও খালাস বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরেও অচলাবস্থা দেখা দেয়।
বেনাপোল স্থলবন্দরেও একই চিত্র। কলমবিরতির কারণে দুপুর পর্যন্ত ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ট্রাকের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৪৫০। বেলা ৩টার পর কিছুটা কার্যক্রম শুরু হলেও দিনভর আমদানি-রফতানি কার্যত বন্ধ ছিল।
এদিকে কাস্টমস, ভ্যাট ও শুল্ক কার্যালয়ের ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’ এক সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবি জানিয়েছে:
১. রাজস্ব অধ্যাদেশ বাতিল
২. এনবিআর সংস্কার কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ
৩. সব অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার
পরিষদ জানায়, ঈদের ছুটি সমন্বয়ের কারণে শনিবার সরকারি অফিস খোলা থাকলেও কলমবিরতি কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে এবং নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
চট্টগ্রামে কাস্টমস কর্মবিরতির পাশাপাশি সকাল থেকে কনটেইনারবাহী যানচালক ও শ্রমিকরাও পণ্য পরিবহন বন্ধ রাখে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বৈঠকের পর বিকাল সাড়ে ৪টায় শ্রমিকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেয়। সন্ধ্যার পর কনটেইনার চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
এনবিআর বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ গঠনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মঙ্গলবার থেকে কলমবিরতিতে যান। তবে বাজেট, রফতানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে।
এ কর্মসূচির কারণে দেশের আমদানি-বাণিজ্যে বিপর্যয় নেমে এসেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।