বাংলাদেশে সুপার মার্কেট প্রসারে পণ্যের ওপর ‘প্যাকেজ ভ্যাট’ চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনে বাজেট-পূর্ববর্তী আলোচনায় সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংগঠনের পক্ষ থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে এ শিল্পের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন সংগঠনের সহ-সভাপতি কাজী ইনাম আহমেদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাতলুব আহমাদ, এনবিআরের সদস্য (ভ্যাট) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর ও ফরিদ আহমেদ প্রমুখ।
পরে ব্যবসায়ীদের দাবিগুলো বিবেচনা করার আশ্বাস দেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কাজী এনাম আহমেদ বলেন, একই রকম ব্যবসা পরিচালনা করে দেশের জেনারেল স্টোরগুলো প্যাকেজ ভ্যাট দিতে পারে। কিন্তু সুপারমার্কেটগুলোয় ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ ভ্যাট আদায় করতে হওয়ায় অনেকে সুপার মার্কেটের প্রতি অনীহা প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি দেশে এ শিল্পের প্রসারে সুপারমার্কেটগুলোকে ‘প্যাকেজ ভ্যাট’-এর আওতায় আনার জোর দাবি জানান।
উল্লেখ্য, ২০১০-১১ অর্থবছরে এ শিল্পের ওপর মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০১১-১২ অর্থবছরে ২ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করা হতো। তবে ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ হার ৪ শতাংশে উন্নীত করা হয়। যা এ শিল্প প্রসারে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সারাবিশ্বে সুপার মার্কেট খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এমনকি পার্শ্ববর্তী ইন্দোনেশিয়ায় সুপার মার্কেটের সংখ্যা ১৪ হাজার, ভারতে ৩ হাজার, শ্রীলঙ্কায় ১ হাজার। তবে, বাংলাদেশে এ মার্কেটের সংখ্যা মাত্র ১২০টি। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
প্রতিবেশী দেশগুলোয় সুপার মার্কেট প্রসারের কারণ হিসেবে কাজী এনাম আহমেদ উল্লেখ করেন, নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের জন্য এ শিল্পের ভূমিকা অনুধাবন করে এসব দেশের সরকার এ শিল্পকে ভ্যাটের আওতামুক্ত রেখেছে। যদিও বাংলাদেশে এ শিল্পের বিকাশে অনেক বাধা রয়েছে। সরকার যদি এ শিল্পের প্রসারে বিনিয়োগবান্ধব নীতি প্রণয়ন ও তার দ্রুত বাস্তবায়ন করে, তবে বাংলাদেশেও এ শিল্প ২০২১ সালের মধ্যে একটি পরিণত অবস্থানে পৌঁছাবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে এ সময় সুপার মার্কেট প্রসারে আমদানিকৃত যন্ত্রপাতির ওপর কর এবং দোকান ভাড়ার ওপর ৯ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারেরও দাবি জানান কাজী এনাম আহমেদ।
লিখিত বক্তব্যে আরও জানানো হয়, সংগঠনের সুপারিশগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে সরকার বর্ধিত আয়কর থেকে অধিক রাজস্ব, অধিক বিক্রির মাধ্যমে ১ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ভ্যাট সংগ্রহ এবং রাত ১০টা পর্যন্ত সুপার মার্কেটগুলো খোলা রাখলে অতিরিক্ত আরও ৭০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে পারবে।
/এসএনএইচ/এমএনএইচ/
