অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আদুল মুহিত বলেছেন, যে আশা নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করা হয়েছিল, সংস্থাটি সেই আশা পূরণ করতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের দুর্নীতি নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত। এটা নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা হয়। এই দুর্নীতির জন্য দুদক-টুদক বানিয়েছি। কিন্তু তাতে খুব একটা ফল পাওয়া যাচ্ছে- সেটা বলা যাবে না।’
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্কলার্স বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদক নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেও দুর্নীতি নির্মূলে তথ্য প্রযুক্তি হাতিয়ার হতে পারে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা দিয়ে অকল্পনীয় ফলাফল পাওয়া যায়।’
নিজের এলাকার একটি কলেজের উদাহরণ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কলেজটিতে অর্থ কষ্ট লেগেই থাকতো। প্রতিবছর আয় দেখাতো এক লাখ। কিন্তু ভর্তি কার্যক্রম অনলাইনে হওয়ার পর কলেজটিতে তার পরের বছরই আয় হলো ৮০ লাখ টাকা। এখন অবশ্য কলেজটি সরকারি হয়েছে।’
প্রবাসী আয় নিয়ে অসন্তোষের কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এখন দেশের সব এলাকার লোক প্রবাসে অবস্থান করছে। এককোটি প্রবাসী আমাদের। কিন্তু খুব বেশি রেমিটেন্স আসছে না। এর কারণ কী, সেটা বের করার জন্য আমরা তদন্ত করছি। আশা করি, শিগগিরই সেটা জানতে পারবো।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রবাসীদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে। যে প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রবাসীরা তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করার সুযোগ পাবে।’
স্কলার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান একে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘প্রবাসীদের যথাযথ সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।বাংলাদেশের এ অবস্থায় আসার পেছনে প্রবাসীদের অবদান আছে। তারা রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে, দেশের দুর্যোগে পাশে দাঁড়াচ্ছে। দেশের বিনিয়োগে অবদান রাখছে।’
প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগ করার জন্য আসলে নানা অসুবিধায় পড়ে জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘দেশে বিনিয়োগের জন্য প্রবাসীরা যে নিবন্ধন করেন, তার তিন থেকে চার শতাংশ বিনিয়োগ করেন। এটা আমেরিকায় হয় একশ’ শতাংশ।’
অনুষ্ঠানে স্কলার্স বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এম ই চৌধুরী শামীম জানান, প্রবাসীদের অবদানের স্বীকৃতি দিতে স্কলার্স বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন নয়টি মানদণ্ডে ১৭ জনকে ‘স্কলার অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করবে শিগগিরই।
এ জন্য ১৭২৬ জনের আবেদন পড়েছে জানিয়ে শামীম জানান, তারা আপাতত ৪০ জনকে বাছাই করেছেন। এদের থেকে ১৭ জনকে বাছাই করতে কমিটি করা হয়েছে।
তিনি জানান, যে নয়টি পুরস্কার দেওয়া হবে সেগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্মাননা স্মারক, তাজউদ্দীন আহমদ সম্মাননা স্মারক, পণ্ডিত রবি শংকর ও জর্জ হ্যারিসন সম্মাননা স্মারক, ড. কুদরত-ই-খুদা সম্মাননা স্মারক, এফ আর খান সম্মাননা স্মারক, আর পি সাহা সম্মাননা স্মারক, ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম সম্মাননা স্মারক, স্যামসন এইচ চৌধুরী সম্মাননা স্মারক ও ফজলে হাসান আবেদ সম্মাননা স্মারক।
অন্য সম্মাননাগুলো প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা পেলেও ফজলে হাসান আবেদ সম্মাননা স্মারক পাবেন বাংলাদেশে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকেরা।
শনিবার প্রথম বেসরকারিভাবে ‘প্রবাসী দিবস’ পালন করা হয়েছে জানিয়ে আগামী বছর এই দিনটি সরকারিভাবে পালন করার আশার কথা জানান চৌধুরী শামীম।
অনুষ্ঠানে স্কলার্স বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান জানান, স্কলার্স বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ও সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেসন ২০০৫ সালে তাদের কার্যক্রম প্রথম শুরু করে।