X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘জ্বালানি খাতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৩ আগস্ট ২০২০, ১৮:৩৯আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২০, ১৮:৪১

‘জ্বালানি খাতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে’

‘বঙ্গবন্ধু একটি বিষয় বুঝতে পেরেছিলেন যেগুলো আমাদের মৌলিক চাহিদা মেটাবে সেগুলোকে জাতীয়করণ করতে হবে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশে সেই সময় পাঁচটি গ্যাস ক্ষেত্র কিনে নেওয়া অনেক বড় সাহসের বিষয় ছিল। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তার লক্ষ্য ছিল। বর্তমান সরকার তারই পথ অনুসরণ করছে। জ্বালানি খাতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’ বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) অনলাইনে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টাস বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেছেন।

জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (বিপ্পা) সহযোগিতায় সেমিনারটি আয়োজন করা হয়।

এফইআরবির চেয়ারম্যান অরুণ কর্মকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এফইআরবির নির্বাহী পরিচালক শামীম জাহাঙ্গীর। সেমিনারে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘আজকে যখন আমি কাগজপত্র ঘাটি, তখন অবাক হয়ে ভাবি, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এত অল্প সময়ে এত বেশি কাজ কীভাবে করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একটি বিষয় বুঝতে পেরেছিলেন,যেসব বিষয় আমাদের মৌলিক চাহিদা মেটাবে, সেগুলোকে জাতীয়করণ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘তখন সারাবিশ্বেই ঠান্ডা লড়াই চলছিল। তখন মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের উন্নত অনেক দেশ আমাদের সমর্থন দেয়নি। সেই সময়ে ব্রিজ নাই রাস্তা নেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ— সেই সময় পাঁচটি গ্যাস ক্ষেত্র কিনে নেওয়া অনেক বড় সাহসের বিষয়। এই সাহস দিয়ে তিনি একটা ভিত রচনা করে দিয়েছিলেন।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সংকটের সময় সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়া বঙ্গবন্ধু শিখিয়েছিলেন। আমরা এখন শতভাগ বিদ্যুতায়ন করছি। এতে দেশের অর্থনীতি বিকশিত হচ্ছে। শহরের মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছে। ভৌগোলিক কারণে গ্রামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি।’

নসরুল হামিদ বলেন, ‘পৃথিবীতে মাত্র ১০টা দেশ আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। আমরাও আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছি। আমরা সময় অপচয় না করে দ্রুত কাজ করছি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব ড. মো. ফরাসউদ্দিন  বলেন, ‘‘১৯৫৬ সালে সিলেটের হরিপুরে গ্যাস পাওয়া গেলো। তখন বঙ্গবন্ধু পূর্ববাংলার শিল্পমন্ত্রী। তখনই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন বাংলাদেশের মাটির নিচে অমূল্য সম্পদ লুকিয়ে আছে। বঙ্গবন্ধু যখন মধ্যপ্রাচ্যে গিয়েছিলেন তখন বঙ্গবন্ধুকে বলা হয়েছিল— ‘তোমার  দেশে তেল, গ্যাস এবং চিংড়ি আছে।’ প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজসম্পদ অন্তর্ভুক্ত ছিল। তখন জাতির পিতা ১২ ভাগ এই খাতে বিনিয়োগ করেছিলেন।’’

তিনি বলেন, ‘১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু পল্লি বিদ্যুতায়ন করার জন্য আরইবি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন।’ ড. ফরাসউদ্দিন  বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতিতে আমাদের অর্থনীতি পথ হারায়নি। আমাদের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে আমাদের মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।’

বিপ্পা প্রেসিডেন্ট ইমরান করিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বেসরকারি খাতকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে অংশ গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছেন। বেসরকারি খাত সরকারের সঙ্গে কাজ করে দেশের বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করেছে। আমরা ভবিষ্যতও দেশের উন্নয়নে কাজ করার জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে কাজ করবো।’

মূল প্রবন্ধে এফইআরবি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য মোল্লাহ আমজাদ হোসেন বলেন, ‘এখন সাগরে গ্যাস অনুসন্ধানের চেয়ে এলএনজি আমদানি লাভজনক। এরপরও দেশের জ্বালানি সম্পদ অনুসন্ধানে উদ্যোগ নেওয়া উচিত।  দেশের বিদ্যুৎ খাতেও জ্বালানির সংমিশ্রণে সরকারের নজর দেওয়া উচিত।’ তিনি বলেন, ‘পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।’

বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোর্তজা আহমেদ চিশতী বলেন, ‘বাপেক্সের সাগরে কাজ করার কোনও অভিজ্ঞতা নেই। এজন্য বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করার সুযোগ করতে হবে। এখন তেলের যে দাম কমেছে তাতে অনুসন্ধানে নতুন কোম্পানি পাওয়া কঠিন। এজন্য অতীতে যারা আমাদের সাগরে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে, তাদের সঙ্গে আলোচনায় যেতে হবে। এভাবে দরপত্রের বাইরে গিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসতে হবে।’

বিডিবির সাবেক চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘স্বাধীনতার পরই বিদ্যুৎ উৎপাদনে নজর দেন বঙ্গবন্ধু। তখন রাশিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু আলোচনা শুরু করেন। রাশিয়া আমাদের তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়েছিল। একইসঙ্গে দেশের বড় বড় সবখানে সাবস্টেশন নির্মাণ করে দিয়েছিল তারা। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর সেই ধারাবাহিকতা আর রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এরপর বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আবারও বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়েছে। এতে দেশের শতভাগ মানুষের কাছে এখন বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করছে।’

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সালেক সুফিসহ সেমিনারের আরও বক্তব্য দেন এফইআরবির সদস্য শাহনাজ বেগম, আজিজুর রহমান, মোজাহেরুল হক রুমেন।

 

/এসএনএস/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কোনও রান না দিয়ে ৭ উইকেট, টি-টোয়েন্টিতে ইন্দোনেশিয়ার বোলারের বিশ্ব রেকর্ড
কোনও রান না দিয়ে ৭ উইকেট, টি-টোয়েন্টিতে ইন্দোনেশিয়ার বোলারের বিশ্ব রেকর্ড
রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ নিহত ২
রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ নিহত ২
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত