X
শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘মাথাপিছু আয় ২৮২৪ ডলার হলে মাছ-মাংস কীভাবে বিলাসী পণ্য হয়’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৭ নভেম্বর ২০২২, ১৮:১৪আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২২, ১৮:৫৪

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং-সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেছেন, দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ ডলার হলে মাছ-মাংস কীভাবে ‘বিলাসী পণ্য’ হয়, এটা একটা প্রশ্ন। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সানেম আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি: উদ্বেগের জায়গা ও করণীয়’ শীর্ষক অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

সেলিম রায়হান বলেন, ‘দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার আশঙ্কা কম। তবে দুর্ভিক্ষের কথা বারবার বললে আতঙ্ক তৈরি হয়। এতে একটি গোষ্ঠী সুযোগ নিতে পারে। দুর্ভিক্ষ না হলেও সাময়িক সময়ের জন্য কোনও কোনও জায়গায় খাদ্য সংকট হতে পারে। এমন আশঙ্কা থাকলে আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।’

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, ‘বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে বড় শঙ্কার জায়গা হচ্ছে—উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য নিরাপত্তায় ঝুঁকি। গত ফেব্রুয়ারি থেকে মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে সাড়ে ৯ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। বাস্তবে মূল্যস্ফীতি আরও বেশি। তবে কমিয়ে দেখানো হচ্ছে—এমন বিতর্কও আছে। অথচ ভিয়েতনাম, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় মূল্যস্ফীতির হার বাংলাদেশের চেয়ে কম। গত অক্টোবরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ভারতে ৬ দশমিক ৭৭, ইন্দোনেশিয়ায় ৫ দশমিক ৭১ এবং ভিয়েতনামে ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর বাংলাদেশে ছিল ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ।’

রফতানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের ওপর ধারাবাহিক জরিপের ফলাফল তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘পোশাক শ্রমিকদের খাদ্য নিরাপত্তার সূচক নিম্নমুখী। তার মানে পোশাক শ্রমিক ও তার সন্তানেরা আগের চেয়ে কম খাবার খাচ্ছেন। শ্রমিকদের মাসিক মজুরিও কমেছে। ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ার কারণে শ্রমিকের কর্মঘণ্টা কমেছে।’

সেলিম রায়হান বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও প্রকৃত মজুরি কমে যাওয়ায় খাদ্য নিরাপত্তায় ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, গত ১১ মাসে রিজার্ভ গড়ে ১০০ কোটি ডলার কমেছে। রফতানি ও প্রবাসী আয়েও সামনের দিনে সুখবর নেই। পণ্য আমদানির ঋণপত্র কমেছে। তার মধ্যে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও মধ্যবর্তী কাঁচামাল আমদানি কমে যাওয়ায় চলতি অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান কমবে। বিদেশি ঋণের কাঠামোও পরিবর্তন হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে রফতানি ও প্রবাসী আয় না বাড়লে কয়েক বছর পর এই ঋণ পরিশোধের জন্য অর্থনীতিতে বাড়তি চাপ তৈরি হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণে স্বল্প মেয়াদে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আওতা বাড়াতে হবে। কারণ, অনেকেই নতুন করে খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে পড়বে। রিজার্ভের পতন ঠেকাতে হবে। আর মধ্য মেয়াদে রাজস্ব ও ব্যাংক খাতে সংস্কার আনতে সরকারের সদিচ্ছা লাগবে। তাছাড়া বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা দরকার। সেই কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।’

/জিএম/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গণঅনশনের পরও দবি না মানলে বড় কর্মসূচি
গণঅনশনের পরও দবি না মানলে বড় কর্মসূচি
পেটে ২৮২০ পিস ইয়াবা, শাহজালালে এপিবিএনের অভিযানে আটক
পেটে ২৮২০ পিস ইয়াবা, শাহজালালে এপিবিএনের অভিযানে আটক
দুই দিনের অর্ধদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের
দুই দিনের অর্ধদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে গভীর রাতে ৭৫১ জনকে পুশইন চেষ্টা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে গভীর রাতে ৭৫১ জনকে পুশইন চেষ্টা
সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সতর্ক করে জরুরি নির্দেশনা মাউশির
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সতর্ক করে জরুরি নির্দেশনা মাউশির
কমলো স্বর্ণের দাম, কার্যকর শুক্রবার থেকে
কমলো স্বর্ণের দাম, কার্যকর শুক্রবার থেকে
ফ্যাক্টরি পোড়ানোর হুমকি দেওয়া সেই বিএনপি নেতাকে বিমানবন্দর থেকে আটক
ফ্যাক্টরি পোড়ানোর হুমকি দেওয়া সেই বিএনপি নেতাকে বিমানবন্দর থেকে আটক
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল অধ্যাদেশ অনুমোদন
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল অধ্যাদেশ অনুমোদন
বাংলাদেশসহ ৫ রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশের অনুষ্ঠান স্থগিত করলো ভারত
বাংলাদেশসহ ৫ রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশের অনুষ্ঠান স্থগিত করলো ভারত