X
সোমবার, ১৩ মে ২০২৪
২৯ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক অ্যাকোয়কালচার ও সি ফুড শো মৎস্য খাতে নতুন সূচনা করবে: মৎস্যমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১০ জুন ২০২৩, ১৮:১৬আপডেট : ১০ জুন ২০২৩, ১৮:১৭

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অ্যাকোয়াকালচার ও সি ফুড শো আয়োজন দেশের মৎস্য খাতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। শনিবার (১০ জুন) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকোয়াকালচার অ্যান্ড সি ফুড শো ২০২৩’ উপলক্ষে আয়োজিত অবহিতকরণ কর্মশালা ও প্রেস মিটে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, আগামী ১৯ থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকোয়াকালচার ও সি ফুড শো ২০২৩ আয়োজন করা হচ্ছে। এটি হবে দেশের মৎস্য খাত নিয়ে সবচেয়ে বড় পরিসরের একটি আয়োজন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশে এ আয়োজন অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এ আয়োজন বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে, দেশের চাহিদা পূরণে এবং দেশে-বিদেশি বিনিয়োগের একটা নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।

তিনি বলেন, জার্মানি, স্পেনসহ অন্যান্য দেশের মাছ আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা আসবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। তাদের কাছে আমাদের মৎস্য খাতের উন্নয় চিত্র তুলে ধরতে হবে। মাঠপর্যায়ে তাদের কাজ করার সুযোগ ও ক্ষেত্র তুলে ধরতে হবে। এ আয়োজনে মৎস্য খাতের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্তদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

বিদেশি বিনিয়োগের জন্য মৎস্য খাত বড় সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য কতটা বন্ধুত্বপূর্ণ জায়গা, সেটা সারা বিশ্বে তুলে ধরতে হবে। আমাদের দেশে বিদেশিরা বিনিয়োগ করছেন এবং অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন। সে আগ্রহের ক্ষেত্র নানা ধরনের শিল্প হতে পারে। আমাদের মৎস্য খাতকে বহুমুখী ব্যবহারের জায়গায় নিয়ে আসতে হবে। গতানুগতিক মাছ উৎপাদন ও মাছকে শুধু মাছ হিসেবেই খাওয়া নয়, বরং মৎস্যজাত পণ্যের বহুমুখী ব্যবহারে এগিয়ে যেতে হবে। সেই ব্যবহারের কাঁচামাল মাছ আমাদের রয়েছে। এখানে উৎপাদনপ্রক্রিয়া সহজ, উৎপাদনে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে, আবার উৎপাদিত মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণের সুযোগ সরকার দিচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের উৎসে কর, বাইরে থেকে আমদানি করা মেশিনারিজের ওপর আরোপিত করসহ নানা রকম কর অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। এভাবে সরকার সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানাচ্ছে। এই সুযোগ-সুবিধার কথা বিদেশিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া দরকার।

দেশের মৎস্য খাতের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে শ ম রেজাউল বলেন, বর্তমানে প্রায় ৬০ ভাগ প্রাণিজ আমিষের জোগান দিচ্ছে মাছ। প্রতিদিন মাথাপিছু ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে আমরা ৬৭ দশমিক ৮ গ্রাম মাছ গ্রহণ করছি। রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ও পৃষ্ঠপোষকতা এবং বেসরকারি উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসার কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাকালে বিশ্বের যে তিনটি দেশ মৎস্য উৎপাদনে সাফল্য দেখিয়েছে, বাংলাদেশ তার অন্যতম। অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ের মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ তৃতীয়, ইলিশ উৎপাদনে প্রথম এবং বদ্ধ জলাশয়ের মাছ উৎপাদনে পঞ্চম।

তিনি বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে মাছের উৎপাদন ছিল ২৭ দশমিক ১ লাখ মেট্রিক টন, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ৪৭ দশমিক ৫৯ লাখ মেট্রিক টন। একই সময়ে ইলিশের উৎপাদন ২ লাখ ৯৯ হাজার মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ৫ লাখ ৬৭ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। এভাবে মৎস্য খাতে অভাবনীয় ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ইলিশ এবং ২০২২ সালে বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ি জিআই সনদ লাভ করেছে। করোনা সংকটেও মৎস্য খাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে, যাতে এ খাতে ক্ষতিগ্রস্তরা ঘুরে দাঁড়াতে পারে। ফলে বিশ্বের অনেক বড় বড় দেশের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশ মৎস্য উৎপাদনের সক্ষমতা সাফল্যের সঙ্গে দেখাতে সক্ষম হয়েছে।

একটা সময় কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে মাছ রফতানি বিপন্ন অবস্থায় পড়েছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে নিরাপদ ও মানসম্মত মাছ রফতানির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশে আন্তর্জাতিক মানের মাননিয়ন্ত্রণ ল্যাবরেটরি করা হয়েছে। মাছ রফতানির ক্ষেত্রে যেসব দেশ যেভাবে কমপ্লায়েন্স চায়, সেভাবে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের মাছ এখন গুণগত মানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় চমৎকার হিসেবে সমাদৃত হচ্ছে। সে কারণে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের মাছের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. তপন কান্তি ঘোষ এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক ও বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক শ্যামল দাস। কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার স্ট্র্যাটিজিক এনগেজমেন্ট লিড মঈন উদ্দিন আহমেদ।

এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, রফতানিকারক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।

/এসআই/এনএআর/
সম্পর্কিত
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে আব্দুর রহমানের সাক্ষাৎ
সরকার বিনিয়োগকারীদের সব সুবিধা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর: পরিবেশমন্ত্রী
চট্টগ্রামে ফিশারিজ সেন্টারের উদ্বোধন করলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
তথ্যযুদ্ধের যুগে সাংবাদিতার চ্যালেঞ্জ
তথ্যযুদ্ধের যুগে সাংবাদিতার চ্যালেঞ্জ
নীতিনিষ্ঠ অবস্থানে থেকে এগিয়ে যাবে বাংলা ট্রিবিউন
শুভেচ্ছা বার্তায় রুহিন হোসেন প্রিন্সনীতিনিষ্ঠ অবস্থানে থেকে এগিয়ে যাবে বাংলা ট্রিবিউন
বাংলা ট্রিবিউন তার গুণগত মান অটুট রাখুক
বাংলা ট্রিবিউন তার গুণগত মান অটুট রাখুক
বাংলা ট্রিবিউনের দশম বর্ষপূর্তি আজ
বাংলা ট্রিবিউনের দশম বর্ষপূর্তি আজ
সর্বাধিক পঠিত
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে সুপারিশ আর কার্যকর নেই: শিক্ষামন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে সুপারিশ আর কার্যকর নেই: শিক্ষামন্ত্রী
পাস করা ছাত্রছাত্রীদের ডিপ্লোমায় ভর্তির আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর
পাস করা ছাত্রছাত্রীদের ডিপ্লোমায় ভর্তির আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর
বোন রেহানাকে নিয়ে নিক্সন চৌধুরীর বাসায় শেখ হাসিনা
বোন রেহানাকে নিয়ে নিক্সন চৌধুরীর বাসায় শেখ হাসিনা
ঈদের পর শনিবার স্কুল খোলা থাকছে না
ঈদের পর শনিবার স্কুল খোলা থাকছে না
আসামি ধরতে গিয়ে নারীর মাথায় পিস্তল ঠেকালেন ডিবি কর্মকর্তা
আসামি ধরতে গিয়ে নারীর মাথায় পিস্তল ঠেকালেন ডিবি কর্মকর্তা