জৈব জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুতে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হচ্ছে— যা বায়ুর গুণগত মান নষ্ট করছে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করা গেলে সবার জন্য নির্মল বায়ু এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণগুলোর মধ্যে ৭০ শতাংশ দায়ী জীবাশ্ম জ্বালানি। এ বিষয়ে সব পর্যায়ে সচেতন হতে হবে।
শনিবার (১৭ জুন) প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের সেমিনার রুমে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং ওয়ার্ল্ড ভিশনের (বাংলাদেশ) আরবান প্রোগ্রামের যৌথ আয়োজনে ‘নির্মল বায়ু এবং জ্বালানি নিরাপত্তায় নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসার’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
গোলটেবিল বৈঠকের সহ-আয়োজক হিসেবে ছিল পরিবেশ উদ্যোগ, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ) ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর পরিচালক (অ্যাডমিন) মো. জাকির হোসেন।
বৈঠকে মূল বক্তব্যে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জ্বালানি গবেষণা কেন্দ্রের (সিইআর) পরিচালক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির অপার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসগুলোর মধ্যে প্রধানতম উৎস হলো— সোলার এবং বায়ুকল, এগুলোকে সঠিকভাবে গবেষণার মাধ্যমে কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে এবং এটা অর্জন করার জন্য কাজ করতে হবে।’
ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘নির্মল বায়ু মানুষের অধিকার, কিন্তু ঢাকা শহরের অধিবাসীরা এ অধিকার থেকে বঞ্চিত। জৈব জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুতে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হচ্ছে— যা বায়ুর গুণগত মান নষ্ট করছে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করা গেলে, সবার জন্য নির্মল বায়ু এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’
শরীফ জামিল বলেন, ‘জ্বালানি একটি কৌশলগত পণ্য। টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানির অভাবে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতার ফলে বর্তমানে জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকির মুখে। জ্বালানি নিরাপত্তায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিকল্প নেই। অপরদিকে আমাদের মনে রাখতে হবে— জ্বালানি নিরাপত্তা দিতে গিয়ে যেন পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণগুলোর মধ্যে ৭০ শতাংশ দায়ী জীবাশ্ম জ্বালানি। এ বিষয়ে সব পর্যায়ে সচেতন হতে হবে।’
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের উপ-পরিচালক মঞ্জু মারীয়া পালমা,
ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান, আর্থ সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মাদ মামুন মিয়া, বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ) এর সদস্য সচিব ও সেভ আওয়ার সি-এর মহাসচিব মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের মোহন কুমার দাস, বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র লেকচারার মাহমুদা ইসলা, একই ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদা পারভীনসহ প্রমুখ।