চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, এক সময় সিটি করপোরেশনের মেটারনিটি হাসপাতালগুলো প্রসূতি মায়েদের সেবা প্রদানে নগরবাসীর আস্থা অর্জন করেছিল এবং সারা বছরই প্রসূতি মায়েদের ভিড় লেগেই থাকতো। আমি দেখেছি অনেক দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এখানে সেবা নিতে আসতেন। তখন চিকিৎসা ব্যবস্থার দক্ষতা ও সক্ষমতা সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল। পরবর্তীতে নানা কারণে সে সুনাম আর ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। এখন আবার চিকিৎসাসেবার সেই হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার করতে হবে।
শনিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কাট্টলী মোস্তফা হাকিম সিটি করপোরেশন মাতৃসদন হাসপাতালে ঝটিকা পরিদর্শনকালে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি। পরিদর্শনকালে প্রশাসক হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীদের খোঁজ-খবর নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। সেবা পেতে কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা সেটি জানতে চান।
খোরশেদ আলম সুজন বলন, ডাক্তার পেশাটি একটি মহান পেশা। একজন ডাক্তার জীবন এবং মৃত্যুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে জীবনের ফুল ফোটান। তাই সকল ডাক্তারদের আরও আন্তরিক হতে হবে। নিজের মতো করে নিজের কর্মস্থলকে সাজিয়ে নিতে হবে।
হাসপাতালগুলোর সেবার মান অবনতিশীল হওয়ায় রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন না অভিযোগ করে তিনি বলেন, অনিয়ম ও ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণে সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্যসেবার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। বিশেষ করে প্রান্তিক শ্রেণির মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ ও নিশ্চিত করতে যে লক্ষ্য,পরিকল্পনা ও দায়বদ্ধতা থাকা উচিত তা করতে না পারলে ভাবমূর্তির সংকট তৈরি হয়। এই সংকটে যাতে পড়তে না হয় তার জন্য সকলকে শতভাগ পেশাগত দায়বদ্ধতা নিয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তিনি স্বীকার করেন যে, দীর্ঘদিন ধরে সুসংহত চাকরিবিধি ও প্রবিধান না থাকায় অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এখানে চাকরি করতে আগ্রহী নন। একজন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর যে সম্মানজনক বেতন কাঠামো থাকা দরকার তা অবশ্যই হতে হবে এবং মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে শীঘ্রই প্রজ্ঞাপন জারি হবে বলে আশা করছি। তখন সিটি করপোরেশনে দক্ষ জনবল নিয়োগে কোনও বাধা থাকবে না।
হাসপাতালে রোগী স্বল্পতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আমার এই ঝটিকা অভিযান চলমান থাকবে। রাত কিংবা দিনে আমি হাসপাতাল ভিজিট করবো। এতে কোনও অনিয়ম, দুর্নীতি কিংবা রোগীসেবা বঞ্চিতের অভিযোগ আমলে নিয়ে কর্তব্যরতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চসিক পরিচালিত হাসপাতালগুলোতে যে কোনও অভিযোগ বা পরামর্শ আমলে নেওয়া হবে।
এ সময় প্রশাসক হাসপাতালের রেজিস্টার, হাজিরা বই, ওষুধপত্র ও মালামাল স্টোর তদারকি করেন এবং এই হাসপাতালের সার্বিক পরিস্থিতি ও আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিলের নির্দেশনা দেন। মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালে চক্ষু ও ডেন্টাল হাসপাতাল কর্নার খোলার বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন বলেও প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন উল্লেখ করেন।
পরিদর্শনকালে ডাক্তার নাসিম ভূঁইয়া, ডাক্তার সুশান্ত, ডাক্তার ইফাত জাহান, ডাক্তার নোমান, ডাক্তার আইরিন, ডাক্তার সেলিনাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।