মেহেরপুরের গাংনীতে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাচন অফিসের বিরুদ্ধে। কুষ্টিয়ায় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতির রেশ কাটতে না কাটতে গাংনী নির্বাচন অফিসের এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এর জন্য সচেতন মহল নির্বাচন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তদারকি না থাকা ও উদাসীনতাকে দায়ী করছেন।
তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের শিলিলপাড়ার মৃত দিদার শিলিলের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী নজরুল ইসলাম জানান, ’ব্যক্তিগত একটি কাজ করতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে জানতে পারি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবপোর্টালে আমার কোনও তথ্য নেই। আমি বেঁচে নেই এ কারণে ভোটার তালিকা থেকে আমার নামসহ সব তথ্য অপসারণ করা হয়েছে। আমার প্রয়োজন ছিল বলে বিষয়টি যাচাই করতে নির্বাচন অফিসে গেলে ভোটার তালিকায় নাম নেই বলে তারা নিশ্চিত করে। পরে এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র নিয়ে তালিকাভুক্ত করে নতুন করে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেওয়ার জন্য গাংনী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে গত ১০ সেপ্টেম্বর লিখিত আবেদন করেছি।’
নজরুল ইসলামের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) থাকলেও তাকে মৃত দেখিয়ে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কী কারণে ভোটার তালিকা থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে তা তিনি জানেন না। তবে এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতি করে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়া কিংবা অন্য কোনও অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে কোনও অপরাধী চক্র এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নজরুল ইসলামকে পুনরায় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে ৯ সেপ্টেম্বর একটি প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়েছে।
গাংনী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনরত মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কবির উদ্দীন বলেন, ‘মৃত্যুজনিত কারণ ছাড়া অন্য কোনও কারণে কারও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যায় না। প্রতি বছর ভোটার তালিকা আপডেট বা হালনাগাদ করার নিয়ম থাকলেও নানা কারণে প্রতি বছর তা হয়ে ওঠে না। তবে এক্ষেত্রে আপডেট বা হালনাগাদ করার সময় কোনও ডিজিট ভুলের কারণে বা তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারদের তদারকির অভাবে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আবেদন পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রকৃত কারণ জানা যাবে। ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত কোনও কাজে নজরুল ইসলামের ভোটার আইডি কার্ড হয়তো ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি। তাই এতদিন জানা যায়নি ভোটার তালিকায় তার নাম আছে কিনা। সম্ভবত, ২০১৫ সালের আগে তার নাম কাটা হয়েছে। কারণ ২০১৫ সাল থেকে নতুন ভোটার তালিকাভুক্তির এবং বর্তমান ভোটার তালিকার সংশোধিত তথ্যাবলি উপজেলা ও জেলা থেকে সার্ভারে দেখতে পাই। কিন্তু তার আগের তথ্য শুধু ঢাকা থেকে দেখা যায়। রবিবারেই (১৩ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়টি ঢাকা অফিসকে জানিয়েছি।’