কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব টানেলের ৬১ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি আজ শনিবার (১২ ডিসেম্বর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ প্রকল্পের দ্বিতীয় টিউবের খনন কাজ উদ্বোধন করেন। তিনি জানান, ১০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ টানেলের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
মন্ত্রী বলেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন এ টানেল দক্ষিণ এশিয়ার নদীর নিচে প্রথম টানেল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের ফলে চট্টগ্রাম শহর চীনের সাংহাই নদীর মতো ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ মডেল গড়ে উঠবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার পাশাপাশি এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপিত হবে।
তিনি আরও বলেন, টানেল নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এই টিউব নির্মাণ কাজ শেষে আগামী ২০২২ সালে টানেলটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা আছে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা প্রকল্পটির শেষ করতে পারবো।
চট্টগ্রাম প্রান্তে এসময় ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে যুক্ত ছিলেন ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সেতু বিভাগের সচিব মো. বেলায়েত হোসেন, প্রকল্প পরিচালক হারুন উর রশিদসহ প্রকল্পের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, নৌবাহিনীর সদস্যগণ ও জনপ্রতিনিধিরা।
আনোয়ারা প্রান্তের প্রথম টিউব থেকে ১২মিটার দূরে এই টিউবটি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্ণফুলী টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) এরই মধ্যে বসে গেছে। সেখানে ১২ মিটার গভীরে মেশিনটি বসানো হয়েছে। সেখান থেকে খনন শুরু করে সর্বোচ্চ ৪৩ মিটার বা ১৪০ ফুট নিচ দিয়ে সড়ক খোদাই করে এটি পতেঙ্গা অংশে বের হবে।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলী টানেলের খনন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন দশমিক চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ টানেলটি পতেঙ্গার নেভাল অ্যাকাডেমি পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে কাফকো ও সিইউএফএল পয়েন্টের মাঝখান দিয়ে কর্ণফুলী নদীর ওপারে গিয়ে উঠবে। মূল টানেলের দৈর্ঘ্যের মধ্যে টিউবের দৈর্ঘ্য হবে দুই হাজার ৪৫০ মিটার। প্রতিটি টিউব চওড়ায় হবে ৩৫ ফুট এবং উচ্চতায় প্রায় ১৬ ফুট। টিউব দুটির একটি দিয়ে শহর থেকে গাড়ি প্রবেশ করবে। আরেকটি টিউব দিয়ে ওপারে যাবে। এজন্য কর্ণফুলীর পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে পাঁচ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক এবং ৭২৭ মিটার ওভারব্রিজও তৈরি করা হবে। টিউব বসানোর জন্য খনন কাজের পাশাপাশি দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের কাজও সমানতালে চলছে।