X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে রাজনীতিকদের শোক ও শ্রদ্ধা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১২ জানুয়ারি ২০২১, ০১:০৮আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২১, ০২:২৩

বিশিষ্ট সাংবাদিক, দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি-জাপাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। সোমবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে ছুটে যান বিভিন্ন দলের দায়িত্বশীলরাও। তার মৃত্যুতে রাজনীতিকরা জানিয়েছেন শোক ও সমবেদনা।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ছয়টার পর মহাখালীর একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন মিজানুর রহমান খান। ১৯৬৭ সালের ৩১ অক্টোবর ঝালকাঠির নলছিটিতে জন্ম নেওয়া শক্তিমান এই সাংবাদিক মৃত্যুকালে রেখে গেছেন মা, স্ত্রী, তিন সন্তান, পাঁচ ভাই, তিন বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। তার জানাজা আগামীকাল (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।

মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘মিজানুর রহমান খান ছিলেন অসাধারণ মেধাবী, স্পষ্টবাদী ও সত্যসন্ধানী সাংবাদিক। মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে মরহুম মিজানুর রহমান খানের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। স্বাধীন সাংবাদিকতার মহান ব্রতকে সামনে রেখে তিনি নিরলস কাজ করেছেন, সেটি তার সতীর্থ সাংবাদিকরা চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে মনে রাখবেন বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘একজন নীতিবান সাংবাদিক হিসেবে মিজানুর রহমান খানের লেখনি ছিল সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে। তার সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যবোধের জন্য তিনি সকলের নিকট ছিলেন শ্রদ্ধাভাজন। সাংবাদিকতা জগতে তার অবদান নিঃসন্দেহে অনস্বীকার্য। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের এই দুঃসময়ে তার মৃত্যু এক বিশাল ক্ষতি।’

এক শোকবার্তায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, ‘প্রয়াত সাংবাদিক মিজানুর রহমান ছিলেন অত্যন্ত আদর্শবান এক সংবাদকর্মী। সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থেকে তিনি পেশাদারিত্ব বজায় রেখেছেন। নতুন প্রজন্মের সংবাদকর্মীদের সামনে প্রয়াত মিজানুর রহমান খান অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন।’

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘তিনি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিশেষ করে আইন-আদালত বিষয়ে রিপোর্টিং ও প্রতিবেদন তৈরিতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ খুঁজতে গিয়ে তিনি মার্কিন এবং ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রক্ষিত দলিলসমূহ সংগ্রহ করেন এবং যার ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদনে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলের সম্পৃক্ততার বিষয়টি দেশবাসীর সামনে আসে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে তিনি এত স্বল্প বয়সে মৃত্যুবরণ করলেন, এর মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বড় ধরনের শূন্যতা সৃষ্টি হবে।’

সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে দেশের গণমাধ্যম জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল, বলে উল্লেখ করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অন্যতম ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘মিজানুর রহমান ছিলেন সৎ নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ, সাহসী সাংবাদিকতার প্রতীক। সাংবাদিকতা ছাড়াও তিনি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শিক্ষক ছিলেন এবং নিয়মিত কলাম লিখতেন। নিরপেক্ষ সাংবাদিকতায় তার অবদান, দেশপ্রেম, সততা এবং পেশাগত নিষ্ঠাকে সবাই ধারণ করলেই বহু প্রতিভায় গুনান্বিত সাহসী সাংবাদিক, কলামিস্ট, আইনের শিক্ষক মরহুম মিজানুর রহমান খানের প্রতি যথার্থ সম্মান জানানো হবে।’

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ‘সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান এর মৃত্যু মেনে নেওয়া খুবই কঠিন এবং বেদনাদায়ক। তার মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হলো তা সহজে পূরণ হবার নয়। দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক তার অনুসন্ধিৎসু সাংবাদিকতা ও লেখালেখি নানাদিক থেকে ছিল গুরুত্বপূর্ণ।’

এক শোক বিবৃতিতে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘অত্যন্ত কম বয়সে (৫৩ বছর) মারা গেছেন মিজান। তার মতো মানুষরা সময়ের সঙ্গে আরও অনেক পরিণত হয়ে ওঠেন। আরও পরিণত একজন মিজানের কাজ থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি, এটা ভীষণ হতাশার। কিন্তু এটাও আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই সময়ের মধ্যে তিনি যা করেছেন সেটাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটা অনাগত দিনেও আমাদের পথ দেখাবে।’

ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এবং সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়াল বলেন, ‘মিজানুর রহমান বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় নতুন দিশা এনেছেন। তার লেখা ও প্রতিবেদন নতুন প্রজন্মের কাছে পাঠ্য। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে তার গবেষণাধর্মী প্রতিবেদনের জাতির অমূল্য সম্পদ। তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি।’

সোমবার মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই হাসপাতালে ছুটে যান অনেকেই। সেখানে গিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান। তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের শোকের দিন।’

সেখানে আরও উপস্থিত হন, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, ঐক্য ন্যাপ সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হারুনার রশিদ ভুঁইয়া, জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী ও সদস্য সচিব মজিবুর রহমানসহ আরও অনেকে।

আরও পড়ুন: সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান আর নেই

/এসটিএস/এনএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
‘শো মাস্ট গো অন’
চিকিৎসা সুরক্ষা আইন জরুরি‘শো মাস্ট গো অন’
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!