X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

আজ কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
০৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৭:৫২আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ১২:৩৩

আজ কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস আজ কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া হানাদার মুক্ত হয়েছিল। কোটালীপাড়া উপজেলায় বয়ে গিয়েছিল  আনন্দের বন্যা। অনেক দুঃখ বেদনার পরও সেদিন এলাকার মানুষের মধ্যে ছিল আনন্দ আর উল্লাস। কোটালীপাড়াবাসি পেয়ে ছিল মুক্তির স্বাদ।

৩ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কাকডাঙ্গা রাজাকার ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারা হামলা চালিয়ে ক্যাম্পটি দখল করে নেয়।  রাজাকার ক্যাম্পের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। আর এই দিন সর্ব প্রথম গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়।

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এ বছর হেমায়েত বাহিনী কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস পালন করবে। এ উপলক্ষে উপজেলার টুপুরিয়া গ্রামে নির্মিত হেমায়েত বাহিনী স্মৃতি জাদুঘর চত্ত্বরে আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

জানা গেছে, যুদ্ধকালীন সময়ে এ অঞ্চলে পাকবাহিনী ও তাদের দোষরা ছিল খুবই শক্ত অবস্থানে।  আর সে কারণে কোটালীপাড়ার সন্তান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সৈনিক হেমায়েতউদ্দিন যুদ্ধ শুরু হলে দেশে পালিয়ে আসেন। গড়ে তোলেন নিজস্ব বাহিনী। সাড়ে ৩ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন হেমায়েত বাহিনী। কোটালীপাড়ায় তিনি একটি ট্রেনিং ক্যাম্পও গড়ে তোলেন। যেখানে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরকেও যুদ্ধের ট্রেনিং দেওয়া হতো।  মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বেশ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় হেমায়েত বাহিনী। উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ হয় হরিনাহাটি, মাটিভাঙ্গা, বাশবাড়িয়া, ঝনঝনিয়া,রামশীল,জহরের কান্দি, কোটালীপাড়া সদরসহ প্রভৃতি স্থানে। এ ছাড়া ছোট যুদ্ধ হয়েছে বেশ কয়েকটি। আর এ সব যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন হেমায়েত বাহিনী প্রধান হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রম।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মুজিবুল হক বলেন, ‘১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শুধু যৌথবাহিনীই দেশ মাতৃকার মুক্তিযুদ্ধ করেনি। পাক হানাদার বাহিনীকে এদেশ থেকে বিতাড়িত করতে তৎকালীন সময়ে এদেশে গঠিত হয়েছিল কয়েকটি বাহিনী। ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চল  নিয়ে গঠিত হয়েছিল হেমায়েত বাহিনী। আমরা এই হেমায়েত বাহিনীর অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করেছি।’

কোটালীপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সামচুল হক বলেন, ‘৭২টি গ্রুপের সমন্বয়ে গঠিত এই হেমায়েত বাহিনী যুদ্ধ করেছিল মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে। এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় ৭ হাজার। তার মধ্য থেকে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে ২৪ জন আহত ও ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।’

কোটালীপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবুল কালাম দাড়িয়া বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ  চলাকালীন সময়ে হেমায়েত বাহিনীর সদস্যরা ১৩৪টি অপারেশন পরিচালনা করে। এর মধ্যে রামশীলের যুদ্ধ অন্যতম। এই যুদ্ধটি অত্র অঞ্চলে ঐতিহাসিক রামশীলের যুদ্ধ বলে পরিচিত। হেমায়েত বাহিনীর প্রধান হেমায়েত উদ্দিন ঐতিহাসিক রামশীলের যুদ্ধে মারত্মক আহত হন।’ মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের কারণে দেশ স্বাধীন হবার পর হেমায়েত উদ্দিনকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।

/এসএনএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র
ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র
এক উপজেলায় ১৩ প্রার্থীর সবাই আ. লীগের
এক উপজেলায় ১৩ প্রার্থীর সবাই আ. লীগের
শিরোপাজয়ী দল কি কোটি টাকা পাবে?
ফিরছে সুপার কাপশিরোপাজয়ী দল কি কোটি টাকা পাবে?
রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে ইউক্রেন: গোয়েন্দা কর্মকর্তা
রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে ইউক্রেন: গোয়েন্দা কর্মকর্তা
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ