X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচার ছাড়াই নীলফামারীতে চলছে খানা জরিপ, বিপাকে গণনাকারীরা

নীলফামারী প্রতিনিধি
২২ এপ্রিল ২০১৭, ০৯:৩৫আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০১৭, ০৯:৩৯

নীলফামারী

নীলফামারীতে গুরুত্বপূর্ণ খানা তথ্য ভাণ্ডার শুমারির কাজ চলছে ঢিলেঢালাভাবে। তবে জরিপ শুরুর আগে কোনও প্রচার প্রচারণা চালানো হয়নি। ফলে অনেকেই তথ্য দিতে চাইছে না। তাই মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে ঝামেলায় পড়েছেন গণনাকারীরা।

ন্যাশনাল হাউজহোল্ড ডাটাবেজের (এনএইচডি) আওতায় খানা ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে ৪ এপ্রিল। তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন প্রায় দুই হাজার ৫০০ গণনাকারী। কথা ছিল তথ্য সংগ্রহ শুরুর আগে শুমারি সম্পর্কে জনগণকে প্রচার সম্পর্কে জানাবে। পোস্টারিং ও মাইকিং করে জানানো হবে। এলাকাবাসী জানান, এ ধরনের প্রচার জেলার কোথাও করা হয়নি। 

জেলা সদরের রামনগর ইউনিয়নের বিশমুড়ি গ্রামের ইউপি সদস্য আশরাফ আলী বলেন, ‘আগে দেখেছি সরকারের কোনও শুমারি হলে এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালানো হতো। কিন্তু এবারে খানা জরিপে কোনও ধরনের প্রচার নেই। এতে এলাকায় সাধারণ মানুষ ওই শুমারি নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে সরকারের ভালো একটি উদ্যোগ।’

একই ইউনিয়নের বাহালী পাড়া গ্রামের ওজমান গনি (৫৫) বলেন, ‘এলাকায় খানা জরিপ হচ্ছে এমন কথা আগে শুনিনি। হঠাৎ করে বাড়িতে লোক এসে তথ্য চাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছিলাম। প্রচার প্রচারণা থাকলে এমনটি হতো না।

জোড়াবাড়ী ইউনিয়নের হলহলিয়া গ্রামের মফিদুল ইসলাম জানান, আগে তো খানা জড়িপের কথা জানতাম না। এ ব্যাপারে কোনও মাইকিং বা পোস্টারিং করা হয়নি।

ডোমার পৌরসভার ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সুপারভাইজার রুম্মান সরকার বলেন, প্রচার প্রচারণার অভাবে জরিপ কাজে সমস্যা হচ্ছে। বেশিরভাগ খানা প্রধান সহজে তথ্য দিতে চাচ্ছে না। জরিপের কাজে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জম্মনিবন্ধন সনদ প্রয়োজন।

প্রস্তুতি না থাকায় অনেকের জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মনিবন্ধন পত্র খুঁজতে সময় অপচয় করছে। জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের গণনাকারী মাসুম আলম বলেন, ‘ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামে আমি কাজ করছি। এলাকায় প্রচার না থাকায় তথ্য দিতে অনেকে বিলম্ব করছে। একারণে সময় অপচয় হচ্ছে।’

গনণাকারীদের অভিযোগ, প্রচার না থাকায় তথ্য সংগ্রহে খুব কষ্ট হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণনার কাজে নিয়োজিত ডিমলা উপজেলার একাধিক জোনাল কর্মকর্তা ও সুপারভাইজার বলেন, ‘সরকারের বৃহৎ এই কাজে শুধু প্রচারণা না থাকায় সঠিক তথ্য মিলছে না।’

এমনকি সঠিক সময়ে কাজ শেষ করা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা কাজের প্রায় শেষ দিকে কিছু পোস্টার জোনাল কর্মকর্তাদের হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন। অথচ সরকার ওই প্রচারণার কাজে অন্য একটি সংস্থাকে খরচ দিচ্ছে।

এ ব্যাপারেডিমলা উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা এমদাদুল হক এলাকায় প্রচার-প্রচারণা না থাকার কথাটি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘প্রচারের কাজটি আমাদের নয়। ওই কাজটি যাদের করার কথা তারা না করে আমাকে কিছু পোস্টার, ব্যানার ও লিফলেট জোর করে ধরিয়ে দিয়েছে।’

নীলফামারীর পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপ-পরিচালক শহিদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনেক বলেন, ‘আপনারা যেমনটি দেখছেন, আমরাও তেমনটিই দেখছি। এলাকায় যেভাবে প্রচার করার কথা সেটি না হওয়ায় অন্যদের মতো আমারও কাজ সমস্যা হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, নীলফামারী জেলায় দুজন জেলা শুমারি সমন্বয়কারীর তত্ত্বাবধানে ছয়জন উপজেলা সমন্বয়কারী, ৮৪ জন জোনাল অফিসারএবং এক হাজার সুপারভাইজার ও দুই হাজার ৫০০ গণনাকারী মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তত্ত্বাবধানে খানা জরিপের প্রথম পর্যায়ে ৪ এপ্রিল কার্যক্রম শুরু হয় রংপুর, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগে। সেটি সমাপ্ত হবে আগামী ২৩ এপ্রিল।

 

/এসটি/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
খিলগাঁওয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু
খিলগাঁওয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু
‘দাবদাহের মধ্যে কষ্ট হলেও মানুষ ভোট দিতে আসবে’
‘দাবদাহের মধ্যে কষ্ট হলেও মানুষ ভোট দিতে আসবে’
ইরফান খান: জীবনের মোড় ঘুরেছিল ২০০ রুপির অভাবে!
প্রয়াণ দিনে স্মরণইরফান খান: জীবনের মোড় ঘুরেছিল ২০০ রুপির অভাবে!
খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার
খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার
সর্বাধিক পঠিত
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
ভেসে আসা ‘টর্পেডো’ উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড
ভেসে আসা ‘টর্পেডো’ উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড