গাজীপুর জেলার শ্রীপুর পৌরসভা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুর টেক্সটাইলের পাশের জলাশয় থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় কিশোরগঞ্জ জেলার ইউপি সদস্য বদরুল আলম ভুঁইয়াকে (৬২) জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (১৭ জুন) সকাল ১১টার দিকে শ্রীপুর থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর বদরুলকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে পরিবার সদস্যরা তাকে বাসায় নিয়ে যান। প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
থানা পুলিশ জানায়, বদরুল আলম ভুঁইয়া কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার ৪ নম্বর সরারচর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন। তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম এসে তাকে নিয়ে গেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী বেড়াইদেরচালা এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে রাব্বি হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মহাসড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ছোট্ট একটি জলাশয় থেকে অল্লাহু আল্লাহু শব্দ শুনতে পান তিনি। শব্দ শুনে এগিয়ে গেলে জলাশয়ে একটি বস্তার ছেঁড়া অংশ দিয়ে মানুষের মাথা বের হয়ে আছে দেখা যায়। এ সময় আশেপাশের লোকজন ডেকে রাব্বি বস্তাটি পানি থেকে টেনে তোলেন। বস্তা খুলে দেখতে পান জীবিত মানুষ। পরে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বদরুল আলম ভুঁইয়া বলেন, ‘২০১৪ সালে এলাকার ২০ জন লোককে বিদেশে পাঠানোর জন্য ঢাকার আশকোনা এলাকার সিঙ্গাপুর ট্রেনিং সেন্টারের মালিক সাগর মিয়াকে ৩৫ লাখ টাকা দেই। সাগর বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে না পেরে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে টাল-বাহানা শুরু করেন। এ অবস্থায় আমি নিজে জমি বিক্রি করে ২০ জনের টাকা পরিশোধ করি। ওই পাওনা টাকা আনার জন্য বিভিন্ন সময় সাগরের কাছে যাই। বৃহষ্পতিবার ওই টাকা আনতে ট্রেনিং সেন্টারে সাগর মিয়ার সঙ্গে ইফতার করি। এরপর থেকে আর কিছুই বলতে পারবো না।’
বদরুল আলম ভুঁইয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে এগারসিন্ধু ট্রেনে রাজধানীতে সাগর নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন তার বাবা। সন্ধ্যার ট্রেনে তার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু বিকেল থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।’
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জামিল আহমেদ জানান, বদরুল আলম বর্তমানে সুস্থ। ধারণা করা হচ্ছে, ট্রেনিং সেন্টারের মালিক বা তার লোকজন তাকে অচেতন করে মৃত্যু নিশ্চিত ধারণা করে ওই জলাশয়ে ফেলে গেছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
/এসএমএ/টিএন/