বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সদরের খাদিজাতুল কোবরা (রা.) মহিলা কওমি মাদ্রাসায় আট বছরের শিশুকে বর্বর নির্যাতনের ঘটনায় ওই মাদ্রাসার সুপার খাদিজা বেগমসহ চার শিক্ষিকাকে আসামি করে গৌরনদী মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
ওই শিশুকে ১০০ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মুখে গামছা বেঁধে ১৬০টি বেত্রাঘাত ও হাতের নখে সূচ ঢুকিয়ে নির্যাতন করা হয়। শনিবার (১২ আগস্ট) বিকালে নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রীর মা উপজেলার পশ্চিম শাওড়া গ্রামের রেনু বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এরপর সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের মধ্যে দুই শিক্ষিকাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গৌরনদী থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, নির্যাতিতা ছাত্রীর মা রেনু বেগম বাদী হয়ে মাদ্রাসার মহিলা সুপার খাদিজা বেগমসহ আরও তিন শিক্ষিকাকে আসামি করে শিশু নির্যাতন আইনের ৭০ ধারায় মামলা করেছেন।
এরপর শনিবার সন্ধ্যায় থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে উপজেলার দিয়াসুর গ্রাম থেকে মামলার আসামি মাদ্রাসার শিক্ষিকা হাফিজা বেগম ও শাওড়া গ্রাম থেকে আরেক শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তার লিজাকে গ্রেফতার করে। বাকি দুই আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে জানান ওসি।
নির্যাতনের শিকার শিশুটির মা রেনু বেগম জানান, সাড়ে তিন বছর আগে তার একমাত্র মেয়ে কামরুন নাহার সুমাইয়াকে ওই মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়। এরপর থেকেই সুমাইয়াকে মাসিক তিন হাজার টাকা চুক্তিতে মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্রী নিবাসে রাখা হয়।
শুক্রবার সকালে মাদ্রাসার এক ছাত্রী গোপনে তাকে ফোন করে জানায়, মাদ্রাসার তিন নারী শিক্ষক সুমাইয়াকে বৃহস্পতিবার রাতে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। খবর পেয়ে তিনি ওইদিন সকাল ১০টার দিকে মাদ্রাসার আবাসিক হল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধার করেন।
এসময় মাদ্রাসার বড় খালামনি (মাদ্রাসার সুপার) তাকে জানান,এক ছাত্রীর একশ’ টাকা চুরির ঘটনায় সুমাইয়াকে শাসন করা হয়েছে। তবে কোন ছাত্রীর টাকা চুরি হয়েছে তা সুপার বলতে পারেননি। এ ব্যাপারে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘শিশু শিক্ষার্থী সুমাইয়াকে বেত্রাঘাত করায় শিক্ষিকা রোকসানা ও হাফিজা বেগমকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
/এএম