ঠাকুরগাঁওয়ে বন্যার পানি নেমে গেলেও দুর্ভোগ কমেনি বানভাসি মানুষের। বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-ঘরের পুননির্মাণসহ পুনর্বাসনের জন্য নগদ অর্থ সংকটও রয়েছে। ঠাকুরগাঁও পৌর এলাকার ডিসি বস্তি, সদর উপজেলার শুখানপুকুরী কালিকাগাঁও ও পীরগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর খেকিডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে অনেক বাড়ি-ঘরে এখনও পানি জমে আছে।
বন্যার্তদের সহায়তায় ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ৫ লাখ টাকা, ২০০ মে. টন চাল ও এক হাজার প্যাকেট (চিড়া, গুড়, মুড়ি, বিস্কুট) শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বন্যার্তদের পুনর্বাসনের জন্য ২০ লাখ টাকা ২শ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চেয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন।
শুকানপুখুরী ইউনিয়নের কালিকাগাঁও গ্রামের আব্দুল জলিল বলেন, ‘হামার বাড়ি-ঘর ভাইঙ্গে গেছে, ক্ষেতের ফসল বিলিন হইছে, পুকুরের মাছ সব পালায় গেছে, এখন হামরা ছোয়া-পোয়া নিয়া খামও কি, সেটাই এখন চিন্তা। বড় কষ্টে দিনাতিপাত করছি। হামাক ইউনিয়ন পরিষদ হতে ৫ কেজি চাল, আধা কেজি মুড়ি, আধাপোয়া গুড় ও চিড়া দিছে, এইটুকু দিয়েই কোনভাবে চলছি।’
পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরচুনা ইউনিয়নের জগন্নাথপুর খেকিডাঙ্গা গ্রামের কামরুজ্জামান ও রোখসানা পারভিন বলেন, ‘আমাদের বাড়ি-ঘর, ক্ষেতের ফসল যেভাবে নষ্ট হয়েছে, সে তুলনায় ত্রাণ সামগ্রী সামান্য। প্রশাসন থেকে আমাদের চাল, শুকনো খাবার, চিড়া ও গুড় দিয়েছে। সেগুলো খেয়ে কোনও রকমে বাঁচে আছি।’
জেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় ৬৬ কি. মি. পাকা, ২২০ কি. মি. কাঁচা রাস্তা, ২২টি বড় ব্রিজ, কমপক্ষে ৮৬টি কালভার্ট ও সংযোগ সড়ক ভেঙে প্রায় ৩৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. আবু মো. খায়রুল কবির জানান. বানভাসিদের স্বাস্থ্য সেবা দিতে ৬৫টি ক্যাম্প, ২ শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। সার্বিক অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন:
হিলিতে লক্ষ্যমাত্রার বেশি চাল সংগ্রহ