রোগীদের আউটডোরে প্রায় ৩ ঘণ্টা অপেক্ষমাণ রেখে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে মিলনমেলা ও মতবিনিময় সভা করেছেন চিকিৎসক ও স্টাফরা। রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় সম্মেলন কক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সকাল ৯টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. উদয় নারায়ন মোহন্ত।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ও সিনিয়র কনসালট্যান্টসহ প্রায় সব চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা ওই মিলনমেলায় যোগ দেন।
গণমাধ্যমকর্মীরা বিষয়টি জেনে সিভিল সার্জনকে জানালে তিনি সরেজমিনে আসতে না পারলেও মোবাইল ফোনে তাৎক্ষণিক খোঁজ-খবর নেওয়ায় পরে তড়িঘড়ি করে ওই মিলনমেলার অনুষ্ঠান শেষ করা হয়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রোগীদের সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ৩ ঘণ্টা দেরিতে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা রোগীদের সেবা দেওয়া শুরু করেন।
শুধু জেলা সদরের জেনারেল হাসপাতালেই নয় সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি, রায়গঞ্জ, শাহজাদপুরসহ প্রায় সবকয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে সরকারি কর্ম ঘণ্টার সময় কর্মশালা ও সভা করায় রোগীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।
অন্যদিকে রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় মিলনমেলা শেষ করা হলেও দুপুর ১টার পর জেনারেল হাসপাতালের একই সম্মেলন কক্ষে বিদেশি দাতা সংস্থা ইউএসএইড এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহযোগিতায় চিকিৎসক ও নার্সদের নিয়ে ‘নবজাতক শিশুদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা’র ওপর কর্মশালার আয়োজন করা হয়। ওই কর্মশালায় শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজের প্রকল্প পরিচালক ডা. বাকী, সিভিল সার্জন ডা. মো. শেখ মনজুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা.উদয় নারায়ন মোহন্তসহ অনেক চিকিৎসক ও নার্স সেখানে দ্বিতীয় সেশনে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. আকরামুজ্জামান বলেন, ‘চিকিৎসক-স্টাফদের মিলনমেলা ও মতবিনিময় সভার বিষয়টি আমার চেয়ে ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়কই ভাল জানেন। আপনি বরং তাকেই জিজ্ঞাসা করেন।’
সিভিল সার্জন ডা. শেখ মো. মনজুর রহমান বলেন, ‘এটি মূলত পদ্ধতিগত ভুল। সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধয়াকের দায়িত্বে আমি যখন ছিলাম, তখন এ ধরনের সভা সকাল ৮টায় শুরু করে এক ঘণ্টার মধ্যে শেষ করতাম। রবিবার রোগীদের বিড়ম্বনার বিষয়টি সকাল ১১টার দিকে অবগত হয়ে তাৎক্ষণিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা দ্রুত সভা শেষ করে রোগীদের এটেন করেন বলে পরে জেনেছি।’
ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা.উদয় নারায়ন মোহন্ত বলেন, ‘হাসপাতালের সেবার মান উন্নয়ন ও চিকিৎসক এবং নার্সদের সুবিধা-অসুবিধা সরাসারি অবগত হয়ে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিমাসেই এ ধরনের সভার আযোজন করা হয়ে থাকে। আর সভা চলাকালীন আউটডোরে রোগী দেখার সুযোগ রাখা ছিল।’