X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

কোটালীপাড়া পৌর নির্বাচন ২৯ মার্চ, তদবিরে ব্যস্ত মনোনয়ন প্রত্যাশীরা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০৩:৩৬আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০৩:৩৮

কোটালীপাড়া পৌরসভা (ছবি- সংগৃহীত) আগামী ২৯ মার্চ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে ঘিরে স্থানীয় প্রায় হাফ ডজন রাজনীতিক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ভোটাদের গুরুত্ব না দিয়ে সবাই ঢাকায় গিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক নেতা এই তথ্য জানিয়েছেন।

কোটালীপাড়া পৌরসভার নির্বাচনে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১ মার্চ মনোনয়নপত্র জমা দেবার শেষ দিন এবং ২৯ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ নির্বাচনি এলাকা হওয়ায় এখানে  আওয়ামী লীগের যিনি মনোনয়ন পাবেন, তিনিই নিশ্চিত মেয়র নির্বাচিত হবেন। মেয়র প্রার্থী হিসেবে এ পর্যন্ত যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তারা সবাই আওয়ামী ঘরানার। অন্য কোনও  দলের প্রার্থী বা স্বতন্ত্র কোনও প্রার্থীর নামও শোনা যাচ্ছে না।

এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন—বর্তমান পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম অহিদুল ইসলাম, সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ কামাল হোসেন, সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক হাওলাদার, আরেক সহ-সভাপতি মুজিবুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দাম,আওয়ামী লীগ নেতা কমল সেন, উপজেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগম ও অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদার।

সম্ভাব্য এসব প্রার্থীর ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে গোটা পৌরসভা এলাকা। প্রতিদিনই প্রার্থীদের সমর্থনে চলছে মিছিল, মিটিং, শোভাযাত্রা। তবে সম্ভাব্য এই প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে  না গিয়ে মনোনয়ন পেতে ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন। কিন্তু এখানকার নির্বাচনে মনোনয়নের বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর।

১৯৯৭ সালে ঘাঘর ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে কোটালীপাড়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন এর আয়তন ছিল ২ দশমিক ৬ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৯৯ সালে কোটালীপাড়া পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ কামাল হোসেন নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৫ সালের নির্বাচনে এইচ এম অহিদুল ইসলাম মেয়র নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১১ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো এইচ এম অহিদুল ইসলাম মেয়র নির্বাচিত হন। পরপর দু’বার নির্বাচিত হয়ে মেয়র এইচ এম অহিদুল ইসলাম পৌরসভায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন বলে দাবি তার। অন্যদিকে প্রথম পৌর মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়ে শেখ কামাল হোসেন পৌরসভার অবকাঠামোগত নানা উন্নয়ন করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

তৃতীয় দফা নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ঘাঘর ইউনিয়নকে এই পৌরসভার অর্ন্তভুক্ত করা হয়। কোটালীপাড়া   পৌসভার বর্তমান আয়তন হয় ১০ দশমিক ৯৭ বর্গ কিলোমিটার । লোক সংখ্যা ২০ হাজার। মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৩১৫ জন। 

মেয়র এইচ এম অহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পৌরসভাকে সড়ক বাতি দিয়ে আলোকিত ও নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ একটি আধুনিক পৌরসভায় রূপান্তরিত করেছি।’ এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক স্থাপন, আধুনিক নিউ কিচেন মার্কেট ও সুপার মার্কেট, পৌর বাস টার্মিনাল, পৌরসভার প্রতিটি বাড়ি বাড়ি পাকা ও আধা-পাকা রাস্তা, আধুনিক ঈদগাহ, মসজিদ, মন্দির, শ্মশান ঘাট, কবরস্থান, ড্রেন, গনশৌচাগার, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ডাস্টবিন ও ব্রিজ নির্মাণ করেছেন বলেও দাবি করেন মেয়র। তিনি বলেন, আশাকরি, আমার কাজের মূল্যায়ন হিসেবে আগামী নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দেবেন।’

সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়ে পৌরসভার অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমি মনে করি, জননেত্রী আমাকেই মনোনয়ন দেবেন।’

অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদার জানান, তিনি ১৯৭৮ সাল থেকে এলাকায় নানা সামাজিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। ১৯৮৭ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর পক্ষে কাজ করায় এবং এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কাজী মন্টুর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি ঘর সে সময় পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে জানান তিনি। দেলোয়ার হোসেন  বলেন, ‘সব সময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছি।আমার বিশ্বাস নেত্রী আমাকে কোটালীপাড়া পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবেন।’

দলীয় মনোনয়ন পেতে ঘাঘর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক হাওলাদারও আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় আমি ঘাঘর ইউনিয়নের ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। এই কাজের মূল্যায়ন হিসেবে দল আমাকে মনোনয়ন দেবে, এটা আমার বিশ্বাস।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নারায়ন চন্দ্র দাম জানান, ‘ছাত্রাবস্থায় তিনি ছাত্রলীগ করেছেন। দীর্ঘদিন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক হিসেবে আছেন। এ ছাড়াও তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘আমি আমার নিজস্ব অর্থায়নে পৌরসভায় অনেক সেবামূলক কাজ করেছি। আমি আশাবাদী, দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। ’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক বলেন, ‘নেত্রী যদি আমাকে মনোনয়ন দেন, তাহলে আমি নির্বাচন করবো। আমাকে মনোনয়ন না দিলে নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন, আমি তার পক্ষে নির্বাচন করবো। ’

উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগম বলেন, ‘বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছে। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি, নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দেবেন। আমি নির্বাচিত হলে নারী উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করবো।’

 

 

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এই বর্ষায় নির্ধারিত হবে মিয়ানমার জান্তা ও বিদ্রোহীদের পরিণতি?
এই বর্ষায় নির্ধারিত হবে মিয়ানমার জান্তা ও বিদ্রোহীদের পরিণতি?
শেখ হাসিনাই হচ্ছেন ভারতে নতুন সরকারের প্রথম বিদেশি অতিথি
শেখ হাসিনাই হচ্ছেন ভারতে নতুন সরকারের প্রথম বিদেশি অতিথি
অনুমতি ছাড়া হলুদ-মরিচ গুঁড়া ও চিনি বিক্রি করায় জরিমানা
অনুমতি ছাড়া হলুদ-মরিচ গুঁড়া ও চিনি বিক্রি করায় জরিমানা
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি
সর্বাধিক পঠিত
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হামাস, অগ্রহণযোগ্য বলছে ইসরায়েল
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হামাস, অগ্রহণযোগ্য বলছে ইসরায়েল
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা