X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

১৭ বছর ধরে ঝুলে আছে নারায়ণগঞ্জে বোমা হামলা মামলার বিচার

আমীর হোসেন স্মিথ, নারায়ণগঞ্জ
১৬ জুন ২০১৮, ১২:৩১আপডেট : ১৬ জুন ২০১৮, ১৮:৩৯

আজও থামেনি স্বজনদের কান্না আজ ১৬ জুন। ২০০১ সালের এই দিনে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে ভয়াবহ বোমা হামলা হয়। এতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুল হাসান বাপ্পিসহ দলের ২২জন নেতাকর্মী নিহত হন। সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ আহত হন অর্ধশত মানুষ। দীর্ঘ ১৭ বছরেও এই ভয়ঙ্কর বোমা হামলা মামলার বিচার না হওয়ায় হতাশ নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। আদৌ বিচার হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তারা।

নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের দাবি— বোমা হামলায় পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে পরিবারের সদস্যরা খেয়ে না খেয়ে সন্তানদের নিয়ে কষ্টে জীবন ধারণ করছেন। তারা জানান— ওই বোমা হামলার অনেক পরের ঘটনা নারায়ণগঞ্জের সেভেন মাডারসহ অনেক চাঞ্চল্যকর মামলার বিচার হয়েছে। কিন্তু ১৭ বছর ধরে ঝুলে আছে বোমা হামলা মামলার বিচার।

নিহত আক্তার মশুরের ভাই আবুল বাশার বলেন, ‘বোমা হামলার অনেক পরের ঘটনা নারায়ণগঞ্জের সেভেন মার্ডার। সেটির বিচার দ্রুত হয়ে গেলেও দেশের সবচেয়ে বড় বোমা হামলার বিচার আজও  হচ্ছে না। মামলাটি ঝুলে আছে ১৭ বছর ধরে। আদৌ বিচারে হবে কিনা, তা নিয়েও আমরা সন্দিহান।’ এই বোমা হামলা মামলার বিচার যাতে দ্রুত শেষ হয় সে জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন।

নিহত মশুরের স্ত্রী শাহনাজ আক্তার জানান, স্বামীকে হারিয়ে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে অনেক কষ্টে চলছে তাদের সংসার। বোমা হামলার পর প্রধানমন্ত্রীসহ অনেকেই বলেছিলেন, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের ব্যয় ভার গ্রহণ করবেন এবং তাদের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু  গত ১৭ বছরে কাউকেই পাশে পাওয়া যায়নি। বিচারও হয়নি। তিনি বলেন, ‘এখন ছেলে প্রশ্ন করে— কেন আমার বাবার হত্যার বিচার হয় না।

নারায়ণগঞ্জের বোমা হামলার বিচার যাতে দ্রুত শেষ করা হয়, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই দাবি করেন শাহনাজ আক্তার।

১৭ বছরের বিচার হয়নি আলোচিত বোমা হামলা মামলার ঘটনার পরে  নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। সিআইডি দুটি মামলা দীর্ঘদিন তদন্ত করে ২০১৩ সালের ২ মে জঙ্গি নেতা  মুফতি হান্নান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু, যুবদল নেতা শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল এবং ভারতে পলাতক দুই ভাই মোরসালিন ও মোত্তাকিনতে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেয়। মামলাটি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ প্রথম আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আসামি জুয়েল কারাগারে বন্দি। কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শওকত হাসেম শকু জামিনে আছেন। মুফতি হান্নানের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়েছে অন্য আরেকটি মামলায়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, এই মামলার একজন আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবেদন নারায়ণগঞ্জ আদালতে আজও  এসে পৌঁছায়নি। কিন্তু ওই আসামির নাম হাজতির লিস্টে রয়েছে। যে কারণে নতুন করে সাক্ষী নেওয়া যাচ্ছে না। মূলত সাক্ষীর জন্য মামলাটির বিচার আটকে আছে। তিনি বলেন, ‘এটি একটি স্পর্শকাতর ও চাঞ্চল্যকর মামলা। সাক্ষী না এলে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত শেষ করা সম্ভব নয়।’

নারায়ণগঞ্জের এই চাঞ্চল্যকর বোমা হামলা মামলার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন নিহতদের পরিবার ও স্বজনরা।

 

 

 

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
দুর্নীতির দায়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটারকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা
দুর্নীতির দায়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটারকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা
এসএসসি’র ফল প্রকাশের দিন ঘোষণা
এসএসসি’র ফল প্রকাশের দিন ঘোষণা
সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ সেনা আহত
সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ সেনা আহত
ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র
ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক