X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুযোগ পেয়েও মেডিক্যালে ভর্তি অনিশ্চিত জিয়াউরের

জিল্লুর রহমান পলাশ, গাইবান্ধা
১৩ অক্টোবর ২০১৮, ২১:৩০আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ২১:৪৪

বাবার সঙ্গে জিয়াউর রহমান (ছবি– প্রতিনিধি)

খেয়ে না-খেয়ে পড়াশোনা চালিয়ে এসেছেন জিয়াউর রহমান। এবার মেডিক্যালে পড়ার সুযোগও পেয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে মেডিক্যালে ভর্তি হতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন।

জিয়াউর রহমান গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটি ইউনিয়নের পূর্ব ছাপরহাটি গ্রামের আলম মিয়া ও জিন্না বেগমের ছেলে। পেশায় রিকশাচালক বাবার এই ছেলে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজে (শেবাচিম) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

জিয়াউর রহমান জানান, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় ১৭৯০ হয়েছেন তিনি। কিন্তু মেডিক্যালে ভর্তির জন্য যে অর্থ দরকার তা দেওয়ার সক্ষমতা নেই তার পরিবারের।

জিয়াউর রহমান দুই ভাইয়ের মধ্যে বড়। তার ছোট ভাই মাজেদুল ইসলাম পূর্ব ছাপরহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।

গাইবান্ধা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন জিয়াউর। এর আগে ২০০৯ সালে পূর্ব ছাপড়হাটী ব্র্যাক স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) পরীক্ষা অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পান জিয়াউর। পরে ছাপড়হাটী এসসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপনী (জেএসসি) পরীক্ষায় জিপিএ- ৪.৭১ পান। অনেক কষ্টে লেখাপড়া চালিয়ে একই বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি।

জিয়াউর বলেন, ‘খেয়ে না খেয়ে অনেক কষ্টে লেখাপড়া করেছি। বাবার আয়ে সংসার চলে না। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে এবছর মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। বাবা-মা চান, আমি যেন চিকিৎসক হই। কিন্তু চান্স পেয়েও আমার ভর্তি অনিশ্চিত।’

জিয়াউরের বাবা আলম মিয়া বলেন, ‘জীবিকার তাগিদে কুমিল্লায় গিয়ে রিকশা চালিয়ে যা আয় করি তা দিয়ে পরিবারের খরচ চালাতে হয়। রিকশা চালিয়ে ১৫ দিন বা একমাস পর বাড়িতে আসি। বাড়িতে যখন থাকি, কৃষিকাজ করি। সামান্য আয়ে অভাব-অনাটনে চলে সংসার। তারপরও ছেলে মেধাবী হওয়ায় নিজের পাশাপাশি অনেকের সহযোগিতা নিয়ে পড়াশুনা করাতে হচ্ছে। এখন ছেলে মেডিক্যালে ভর্তির চান্স পেয়েছে। কিন্তু ছেলেকে মেডিক্যালে পড়ানো নিয়ে দিশেহারা অবস্থায় আছি। বিত্তবানরা সহযোগিতা করলে হয়ত ছেলেকে মেডিক্যালে পড়ানো সম্ভব হবে।’

মা জিন্না বেগম বলেন, ‘বাড়িভিটা ছাড়া কোনও সম্পদ নেই। স্বামীর আয়ে সংসারই চলে না ঠিকভাবে। দুই ছেলের পড়াশুনার খরচ দেওয়া কষ্টকর। সংসার চালাতেই ধারদেনা করতে হয়। কিছুদিন আগে এনজিও থেকে লোন নিয়েছি।’

জিয়াউরের স্কুলশিক্ষক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে সহযোগিতা পেলে জিয়াউরের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন হয়ত অপূর্ণ থাকবে না।’

 

/এমএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হামাস, অগ্রহণযোগ্য বলছে ইসরায়েল
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হামাস, অগ্রহণযোগ্য বলছে ইসরায়েল
শিবনারায়ণের চোখে আলো দেখছেন মশিউর ও কালাম
শিবনারায়ণের চোখে আলো দেখছেন মশিউর ও কালাম
ঢাকার কোথাও হালকা বৃষ্টি, কোথাও ঠান্ডা ঝোড়ো হাওয়া
ঢাকার কোথাও হালকা বৃষ্টি, কোথাও ঠান্ডা ঝোড়ো হাওয়া
সূর্যকুমারের ছক্কায় সেঞ্চুরি ও মুম্বাইয়ের জয়
সূর্যকুমারের ছক্কায় সেঞ্চুরি ও মুম্বাইয়ের জয়
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস