X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

কুষ্টিয়ায় খেজুর রস আহরণে ব্যস্ত গাছিরা

কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া
১৮ নভেম্বর ২০১৮, ১২:২০আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ১২:২০

কুষ্টিয়ায় খেজুর রস আহরণে ব্যস্ত গাছিরা

হেমন্তের শুরুতে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। কুয়াশা উড়ছে সকালের বাতাসে। কুষ্টিয়ায় জন জীবনের স্বাভাবিক রুটিনে পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো। রাস্তায়, জমিতে কিংবা পুকুরে, মাঠে-ঘাটে খেজুরের গাছের আশেপাশে মানুষের আনাগোনা বাড়ছে। খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।

জানা যায়, শীত যত বাড়ছে রসের চাহিদাও তত বাড়ছে। শীত মৌসুমে গ্রামাঞ্চলের  ঘরে ঘরে খেজুর রস দিয়ে তৈরি হয় হরেক রকমের পিঠা ও পায়েস। তাই বাণিজ্যিকভাবেও খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা। জেলার বাইরের গাছিরাও এসে কুষ্টিয়ায় রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করছে। সুস্বাদু এই খেজুরের রস আগুনে জ্বালিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়। ফলে এসব গাছিদের এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। খেজুর ও রস বিক্রি করেও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এখানকার গাছিরা।

গাছিরা জানায়, প্রতিদিন বিকালে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় মাটির কলস বেঁধে রাখা হয় রসের জন্য। পরদিন সকালে ওইসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে বিক্রি করা হয়। অনেকেই আবার এই রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে থাকেন।

জানা গেছে- কুষ্টিয়ার সদর, দৌলতপুর এবং মিরপুর উপজেলার গ্রামগুলোতে খেজুর গাছের সংখ্য বেশি। এসব খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ ও গুড় তৈরি করে লাভবান হচ্ছেন গাছিরা। আবার বাড়তি লাভের আশায় এসব এলাকায় আসছেন অন্য জেলার গাছিরাও। খেজুর গুড় তৈরির পেশায় এখন বাড়তি আয়ে খুশি তারা।

কুষ্টিয়ায় খেজুর রস আহরণে ব্যস্ত গাছিরা

আলমডাঙ্গার লালপুর থেকে আসা সাইদুর জানান, এবছর কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার নবনির্মিত বাইপাস সড়কের ধারে প্রায় পৌনে দুইশ খেজুর গাছ লিজ নিয়েছেন। স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকায় শীতের ৪ মাসের জন্য খেজুর গাছগুলো লিজ নেওয়া হয়েছে। এসব গাছ থেকে ৩ জন মিলে প্রতিদিন রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করেন। এছাড়াও খেজুরের রসও বিক্রি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ১৯ বছর ধরে এভাবে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করি। এরপর এসব রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করি।’

শিহাব উদ্দিন নামে আরেক গাছি জানান, শীত মৌসুমের শুরু থেকেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করা হয়। শীতের প্রায় চার মাস রস সংগ্রহ করা যায়। এই রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে আমরা সংসার চালাই। তিনি আরও বলেন, ‘শীতের পিঠা ও পায়েসের জন্য খেজুরের রস ও গুড়ের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। আমরা এখানে ১০০ টাকা দরে প্রতিকেজি খেজুরের গুড় বিক্রি করি। এছাড়াও এক কলস রস প্রকার ভেদে এক থেকে দেড়শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

কুষ্টিয়ায় খেজুর রস আহরণে ব্যস্ত গাছিরা

পল্টু আলী নামে এক গাছি জানান, ‘বাংলা আশ্বিন মাস থেকে সাধারণত রস সংগ্রহ শুরু। তবে পৌষ ও মাঘ মাসে সবচেয়ে বেশি রস পাওয়া যায়। এই সময় শীতের প্রকোপ থাকে সবচেয়ে বেশি। আবহাওয়া ঠাণ্ডা থাকলে রসও বেশি পাওয়া যায়।’

স্থানীয় খেজুর রস ক্রেতা ডাক্তার সাদ্দাম হোসেন জুয়েল জানান, ‘শীতের সকালে গাছ থেকে নামানো কাঁচা রসের স্বাদ বর্ণনা করা সম্ভব নয়। এছাড়াও জ্বাল দেওয়া রসের তৈরি বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার অতুলনীয়।’

নাহিদ হাসান মান্নান নামে এক গুড় ক্রেতা জানান, খেজুরের রসের পাটালি গুড়েরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই গুড় দিয়ে হরেক রকম পিঠা বানায় গাঁয়ের বধূরা। আর এই পিঠা বানানো ঘিরে শিশু-বৃদ্ধার বসে থাকার দৃশ্য বাংলার এক পুরনো সংস্কৃতিরই অংশ। শীত নামলে কষ্টের পাশাপাশি পিঠাপুলির আনন্দও জমে ওঠে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

 

/এএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ মে, ২০২৪)
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রামে লরি চাপায় মৃত্যু বেড়ে তিন
চট্টগ্রামে লরি চাপায় মৃত্যু বেড়ে তিন
রাজধানীতে রিকশাচালকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার
রাজধানীতে রিকশাচালকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার
সর্বাধিক পঠিত
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক