X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

একরাম হত্যার পাঁচ বছর: ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ আসামি কোথায় জানে না পুলিশ

রফিকুল ইসলাম, ফেনী
২০ মে ২০১৯, ১৬:৩২আপডেট : ২০ মে ২০১৯, ১৬:৫২

 

Ekram-Murder ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হক একরাম হত্যার পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ আসামিকে এখনও অধরা রয়ে গেছে। এরা কোথায় আছে তার কোনও তথ্য নেই পুলিশের কাছে। অন্যদিকে নিম্ন আদালতে দণ্ডিতদের মধ্যে যারা কারাবন্দি আছেন, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে তাদের আপিলের শুনানি শুরু না হওয়ায় শঙ্কিত রয়েছেন নিহতের স্বজনরা। ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

নিহত একরামের ভাই মোজাম্মেল হক হতাশা প্রকাশ করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রায়ের পর এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অদৃশ্য কারণে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা যেন উচ্চ আদালত থেকে কোনোভাবে রেহাই না পায় সেদিকে সরকারকে দৃষ্টি দিতে হবে।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান কবীর বেঙ্গল জানান, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে পলাতক আসামিরা হলেন- ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহিদ চৌধুরী, আবিদুল ইসলাম আবিদ, চৌধুরী মো. নাফিজ উদ্দিন অনিক, আরমান হোসেন কাউসার, জাহেদুল হাসেম সৈকত, জিয়াউর রহমান বাপ্পি, জসিম উদ্দিন নয়ন, এমরান হোসেন রাসেল ওরফে ইঞ্জিনিয়ার রাসেল, রাহাত মো. এরফান ওরফে আজাদ, একরাম হোসেন আকরাম, শফিকুর রহমান ময়না, কফিল উদ্দিন মাহমুদ আবির, মোসলে উদ্দিন আসিফ, ইসমাইল হোসেন ছুট্টু, মহিউদ্দিন আনিছ, বাবলু ও টিটু। এদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে একেবারে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত জাহিদ চৌধুরী ও আবিদ পালিয়ে দেশের বাইরে চলে গেছে বলে এলাকাবাসীর ধারণা।

এই প্রসঙ্গে ফেনীর পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আসামিদের অবস্থানের বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনও তথ্য নেই। পলাতক ১৭ আসামির অনুসন্ধানে রয়েছে পুলিশ। তাদের হদিস পেলেই গ্রেফতার করা হবে।’

আদালতের পিপি অ্যাড. হাফেজ আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ রায় ঘোষণার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিচারিক আদালত থেকে ডেথ রেফারেন্সের নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। ডেথ রেফারেন্স নথির ভিত্তিতে পেপারবুক প্রস্তুত হলেই হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল শুনানি হবে।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রায়ে বলা হয়, স্থানীয় নির্বাচন থেকে আসামিদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের কারণেই একরামকে হত্যা করা হয়েছে। তবে এক বছরেও উচ্চ আদালতে আপিলের শুনানি না হওয়ায় রায় কার্যকর হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বজনরা।

এই হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডিত কারাবন্দি ২২ জন হলেন- হত্যার পরিকল্পনাকারী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির আদেল, ফেনী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহিল মাহমুদ শিবলু, সাজ্জাদুল ইসলাম পাটোয়ারী ওরফে সিফাত, আবু বক্কার সিদ্দিক ওরফে বক্কর, মো. আজমির হোসেন রায়হান, মো. শাহজালাল উদ্দিন শিপন, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ওরফে আজাদ, কাজী শানান মাহমুদ, মীর হোসেন আরিফ ওরফে নাতি আরিফ, আরিফ ওরফে পাঙ্কু আরিফ, রাশেদুল ইসলাম রাজু, মো. সোহান চৌধুরী, জসিম উদ্দিন নয়ন, নিজাম উদ্দিন আবু, আবদুল কাইউম, নুর উদ্দিন মিয়া, তোতা মানিক, মো. সজিব, মামুন, রুবেল, হুমায়ুন ও টিপু।

খালাসপ্রাপ্ত ১৬ জন হলেন প্রধান আসামি বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী মিনার, পৌর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক জিয়াউল আলম মিস্টার, একরামের একান্ত সহযোগী আওয়ামী লীগ নেতা বেলাল হোসেন পাটোয়ারী ওরফে টুপি বেলাল, মো. আলমগীর ওরফে আলউদ্দিন, আবদুর রহমান রউপ, সাইদুল করিম পবন ওরফে পাপন, জাহিদ হোসেন ভূইয়া, ইকবাল হোসেন, মো. শাখাওয়াত হোসেন, শরিফুল ইসলাম পিয়াস, কালা ওরফে কালা মিয়া, নুরুল আবসার রিপন, মো. ইউনুস ভূইয়া শামীম ওরফে টপ শামীম, মো. মাসুদ, কাদের ও ফারুক।

২০১৪ সালের ২০ মে ফেনী শহরের একাডেমি সড়কে একরামকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার পর গাড়িসহ পুড়িয়ে ফেলা হয়। ওই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই জসিম উদ্দিনের করা হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ ফেনী জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক আমিনুল হক ৩৯ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেন।

পাশাপাশি অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী মিনারসহ ১৬ জন বেকসুর খালাস দেন। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ২২ জন রয়েছেন কারাগারে, আটজন জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক আছেন। ৯ জন শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন।

আরও পড়ুন- 

একরাম হত্যা মামলায় ৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড


যে নৃশংস কায়দায় হত্যা করা হয়েছিল একরামকে

/এফএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
তাইওয়ান প্রণালীতে আবারও চীনা সামরিক বিমান শনাক্ত
তাইওয়ান প্রণালীতে আবারও চীনা সামরিক বিমান শনাক্ত
দলবল নিয়ে উঠান বৈঠকে ফাঁকা গুলি ছোড়ার অভিযোগ বদির বিরুদ্ধে
দলবল নিয়ে উঠান বৈঠকে ফাঁকা গুলি ছোড়ার অভিযোগ বদির বিরুদ্ধে
লাইনে দাঁড়িয়ে ১০ টাকার টিকিট কেটে চোখ পরীক্ষা করালেন প্রধানমন্ত্রী
লাইনে দাঁড়িয়ে ১০ টাকার টিকিট কেটে চোখ পরীক্ষা করালেন প্রধানমন্ত্রী
স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন ওবায়দুল কাদের
স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন ওবায়দুল কাদের
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম