X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

বাঁচানো গেলো না সেই রাজীবকে

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
২১ মে ২০১৯, ১৫:৪৯আপডেট : ২১ মে ২০১৯, ১৭:২০

আনোয়ার হোসেন রাজীব ও রোমানা তাসমিন আনোয়ার হোসেন রাজীবকে (৩১) বাঁচাতে নিজের কিডনি দিতে চেয়েছিলেন রোমানা তাসমিন। রাজীবকে বিয়েও করেছিলেন ভালোবেসে। কিন্তু বাঁচানো গেলো না রাজীবকে। গতকাল সোমবার রাজধানীর ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান রাজীব।

কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রথম ভর্তি হন তিনি। নিজে ছিলেন একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তাই ব্যয়বহুল এ চিকিৎসার খরচ মেটানো তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। একসময় জানতে পারলেন তার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। বাঁচতে হলে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। একদিকে যেমন চিকিৎসা ব্যয় বহন করা সম্ভব ছিল না তার পক্ষে, অন্যদিকে কিডনি পাওয়াও ছিল কঠিন। তখনই আশার আলো হয়ে রাজীবের জীবনে আসেন রোমানা। ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। একসময় গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্ব কালক্রমে গড়ায় ভালোবাসায়। রাজীবকে কিডনি দান করতে এগিয়ে আসেন রোমানা। ২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারি তাদের বিয়ে হয়।
রোমানা তাসমিন পেশায় একজন প্যারামেডিক। কেরানীগঞ্জের সাজেদা হাসপাতালে তিনি কাজ করেন। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ভাটিপাড়ায়। থাকেন ঢাকার লালবাগে একটি ভাড়া বাসায়।

রাজীব-রোমানার ভালোবাসা, বিয়ে আর অসুস্থতার খবর পত্রপত্রিকায় ছাপা হলে ওই সময় সমাজের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, আইনজীবী ও বিত্তবানরা এগিয়ে আসেন। তাদের সহায়তায় আবার চিকিৎসা শুরু হয় রাজীবের। কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য রাজীবকে ভারতে নেওয়া হয়।

রোমানা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘সেখানকার ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন রাজীবের শরীরের যে অবস্থা তাতে কিডনি প্রতিস্থাপন করে কোনও লাভ হবে না। তাতে প্রতিস্থাপন করা কিডনি নতুন করে আক্রান্ত হবে। এজন্য ছয় মাস অপেক্ষা করে অন্যান্য চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। শরীর কিডনি প্রতিস্থাপন করার উপযুক্ত হলে তখন আবার ভারতে নেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু ছয় মাসে আমাদের হাতে থাকা টাকাটা রাজীবের চিকিৎসায় খরচ হয়ে যায়। বছর পার হয়ে যায় কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের টাকা জোগাড় করতে পারিনি। গত পাঁচ বছর ধরে তার ডায়ালাইসিস চলছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘অসুস্থ হওয়ার আগে রাজীব পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালে কাজ করতো। অসুস্থ হওয়ার পর আর তেমন কোনও কাজ করতে পারেনি। একটি দোকানে বসতো কয়েক দিন। কিন্তু পরে তাও করতে পারেনি।’

রাজীব লৌহজং পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে এসএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা কলেজ থেকে ২০০৯ সালে স্নাতকোত্তর করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরায়। নানার বাড়ি ছিল মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের বেজগাঁও ইউনিয়নের সুন্দিসার গ্রামে। পদ্মা নদীতে বাড়ি ভাঙনের পর তারা মুন্সীগঞ্জে চলে আসেন। রাজীবের ছেলেবেলা কাটে মুন্সীগঞ্জে। মৃত্যুর পর শরীয়তপুরের জাজিরায় তাকে দাফন করা হয়।

 

আরও পড়ুন- একটি ভালোবাসার গল্প!

/এফএস/এমএমজে/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জয়পুরহাটে সড়কে প্রাণ গেলো দুই ধানকাটা শ্রমিকের
জয়পুরহাটে সড়কে প্রাণ গেলো দুই ধানকাটা শ্রমিকের
রাজধানীতে ঝড়-শিলাবৃষ্টি
রাজধানীতে ঝড়-শিলাবৃষ্টি
৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে নির্যাতনের শিকার গৃহপরিচারিকাকে উদ্ধার
৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে নির্যাতনের শিকার গৃহপরিচারিকাকে উদ্ধার
এমপি স্ত্রীকে হারিয়ে ৬ ভোটে স্কুল কমিটির সভাপতি বদি
এমপি স্ত্রীকে হারিয়ে ৬ ভোটে স্কুল কমিটির সভাপতি বদি
সর্বাধিক পঠিত
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী