X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

তিস্তার পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি বানভাসি মানুষের

নীলফামারী প্রতিনিধি
২৩ জুলাই ২০১৯, ১৮:১৫আপডেট : ২৩ জুলাই ২০১৯, ১৮:৫৬

জলাবদ্ধতার কারণে চাষাবাদও বন্ধ রয়েছে তিস্তায় পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকার বানভাসি মানুষের। ছেলেমেয়ে, পরিবার-পরিজন ও গৃহপালিত প্রাণী নিয়ে খাদ্য ও পানি সংকট, কর্মহীনতা, অসুস্থতাসহ নানা দুর্ভোগে রয়েছেন তারা। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) সকাল ৬টায় এখানে বিপদসীমার ৫২ দশমিক ৪৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুর রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

১৩ জুলাই বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এখানে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। ওইদিন তিস্তা পাড়ে হলুদ সংকেত জারি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

সরেজমিন দেখা যায়, বানভাসিদের হাতে এখন কোনও কাজ নেই। আয়-উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। বন্যায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। দেখা দিয়েছে খাদ্যাভাব। এখনও কোনও কোনও পরিবার শুকনো খাবার খেয়ে দিনযাপন করছে। দেখা দিয়েছে গবাদিপশুর খাদ্য সংকট। বিশুদ্ধ পানির অভাবে দেখা দিয়েছে নানা রোগবালাই। নেই চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

পূর্ব ছাতনাই কলোনি গ্রামের মহির উদ্দিন (৫৭) বলেন, ‘উজানের পানি বাড়লে তিস্তায় পানি বেড়ে যায়। নিমিষেই তলিয়ে যায় শত শত গ্রাম। রক্ষা করা যায় না বাস্তুভিটা, বাড়িঘর, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, জমির ফসল, বীজতলা ও শত শত একর আয়তনের পুকুরের মাছ।’

একই গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান (৪৯) বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এখনও পানিতে তলিয়ে রয়েছে অনেক বাড়িঘর। সরকারিভাবে যেটুকু সহযোগিতা করা হয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়।’
এই এলাকার বন্যায় চরম কষ্টে দিনযাপন করছেন তিস্তাবেষ্টিত ডিমলার পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী, খগাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছচাপানী ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বানভাসি মানুষরা।

উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান বলেন, ‘বানভাসি মানুষের বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি স্থাপন, শৌচাগার নির্মাণ ও ফসলি জমির জন্য বীজ সরবরাহ জরুরি হয়ে পড়েছে।’

জেলা ত্রাণ, দুর্যোগ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এসএ হায়াত জানান, ডিমলায় ১৫০ মেট্রিক টন চাল, দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং জলঢাকা উপজেলায় ৪১ দশমিক ৪৬০ মেট্রিক টন চাল ও ২০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়।

সিভিল সার্জন ডা. রণজিৎ কুমার বর্মণ বলেন, ‘পানিবাহিত ও বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য এই দুই উপজেলায় ২৪টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আযাদ বলেন, ‘জেলায় সাড়ে ৪৪ হেক্টর জমি সম্পূর্ণ ও সাড়ে ৬৭ হেক্টর জমির উঠতি শাকসবজিসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, বন্যায় পাঁচটি ব্রিজ, তিন কিলোমিটার পাকা রাস্তা, ৪০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ও সাড়ে আট কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

/এমএএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা
টিভিতে আজকের খেলা (৩ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (৩ মে, ২০২৪)
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ও মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ও মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
অপহৃত ১০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে আরাকান আর্মি
অপহৃত ১০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে আরাকান আর্মি
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে