X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ভাঙন আতঙ্কে পদ্মা পাড়ের মানুষ, হাজার পরিবার গৃহহীন

মনির হোসেন সাজিদ, শরীয়তপুর
১৮ আগস্ট ২০২০, ১৯:৫৯আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২০, ২১:৩৭

পদ্মার পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়া চরআত্রা বসাকেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

শরীয়তপুরে বন্যার পানি কমতে থাকলেও স্বস্তি নেই মানুষের মাঝে। নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ এখন ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজারের বেশি পরিবার নদীভাঙনের কবলে পড়ে গৃহহীন হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বর্ষা মৌসুমে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও সদর উপজেলার বেশ কিছু স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। বিশেষ করে, জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা, বড়কান্দি, কুন্ডেরচর, নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা, ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা, তারাবুনিয়া এবং সদর উপজেলার আংগারিয়া, পালং ও তুলাসার ইউনিয়নের মানুষ নদীভাঙনের শিকার হয়। এসব এলাকার এক হাজারের অধিক পরিবার বাস্তুভিটা হারিয়ে গৃহহীন হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে অনেকেই ঘরবাড়ি ভেঙে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিচ্ছে। চরআত্রা বসাকেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দুটি পাকা ভবনসহ সম্পূর্ণরূপে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

পদ্মার পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়া চরআত্রা বসাকের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের ওকুলুদ্দি মুন্সীর কান্দি গ্রামের সিরিয়া বেগম বলেন, বসতভিটাসহ এক বিঘা জমি এক সপ্তাহের মধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। কিছু জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছিলাম, এগুলো নিয়ে এখন এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠবো। তারপর কোথায় যাবো জানি না।

নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা ইউনিয়নের বসাকেরচর গ্রামের শফি বেপারি বলেন, গত ২০ দিনে এই এলাকার প্রায় ২শ’ পরিবার নদীভাঙনের কারণে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। কে কোথায় চলে গেছে তাও আমরা জানি না। ভাঙন অব্যাহত থাকলে আমাদেরকে নিঃস্ব অবস্থায় চলে যেতে হবে।

বন্যার পানিতে পদ্মা পাড়ের চরআত্রা বসাকের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভেঙে গেলো।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলা পদ্মা ও মেঘনা নদী বেষ্টিত হওয়ায় প্রতি বর্ষা মৌসুমেই নদী তীরবর্তী মানুষ ভাঙনের শিকার হয়। তবে নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলায় পদ্মার ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় ভাঙন গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক কম। তারপরেও পদ্মার বাম তীরসহ বেশ কিছু স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধে অস্থায়ীভাবে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকায় অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম নিজে এসব কাজ তদারকি করছেন। এছাড়া জাজিরা উপজেলার চরআত্রা ও নড়িয়া উপজেলার কাঁচিকাটায় ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণের জন্য ৫শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

তবে ভাঙনকবলিত এসব গৃহহীনকে পুনর্বাসনের কোনও ব্যবস্থা এখনও নেওয়া হয়নি। ঘরবাড়ি হারিয়ে যে যার মতো বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। এদের সাময়িকভাবে কিছু ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হলেও স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের কোনও উদ্যোগ এখনও গ্রহণ করা হয়নি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, নদীভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর চূড়ান্ত তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা অনুযায়ী এদের বিভিন্ন আশ্রয়ণ প্রকল্প ও সরকারি খাস জমিতে পুনর্বাসন করা হবে। বর্তমানে নড়িয়া ও জাজিরার অধিকাংশ জায়গা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় এদের এই মুহূর্তে পুনর্বাসন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ভাঙনকবলিত ১শ’ পরিবারকে ঘর তৈরির জন্য টিন ও নগদ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলেই ভাঙনকবলিত সবাইকে পুনর্বাসন করা হবে।

/টিএন/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ মে, ২০২৪)
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রামে লরি চাপায় মৃত্যু বেড়ে তিন
চট্টগ্রামে লরি চাপায় মৃত্যু বেড়ে তিন
সর্বাধিক পঠিত
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক
গরমে সুস্থ থাকতে কোন কোন পানীয় খাবেন? ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় কখন জরুরি?
গরমে সুস্থ থাকতে কোন কোন পানীয় খাবেন? ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় কখন জরুরি?