X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

হাঁসের ডিমে সচ্ছলতার হাতছানি

হিমাদ্রি শেখর ভদ্র, সুনামগঞ্জ
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৫:০০আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৬:২৯

দেশে সবচেয়ে বেশি হাঁসের ডিম উৎপাদিত হয় হাওরবেষ্টিত জেলা সুনামগঞ্জে। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জে প্রায় ২৯শ’ হাঁসের খামার রয়েছে। এসব খামারে ও গৃহস্থ পরিবারে থাকা হাঁস মিলিয়ে সারা বছর জেলায় হাঁসের ডিম উৎপাদন হয় ২৭ কোটি ৫৫ লাখ ১১ হাজারের বেশি। চাহিদা মিটিয়ে প্রায় দুই কোটির মতো ডিম উদ্বৃত্ত থাকে সুনামগঞ্জে। এই ডিম সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অন্যান্য স্থানে পাঠানো ও সংরক্ষণ করা সম্ভব হলে বিপুল পরিমাণ জনগোষ্ঠী সচ্ছলতার দেখা পাবেন। 

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ২৯৫টি, ছাতকে ৩২৩টি, দোয়ারাবাজারে ২৩৫টি, জামালগঞ্জে ২৮০টি, জগন্নাথপুরে ১৭৫টি, দিরাইয়ে ২৯৫টি, বিশ্বম্ভরপুরে ২৮১টি, তাহিরপুরে ১৫৫টি, ধর্মপাশায় ৩৫৮টি, শাল্লায় ১৫৮টি ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ৩১৫টি হাঁসের খামার রয়েছে। মোট দুই হাজার ৮৭০টি হাঁসের খামার রয়েছে জেলায়।

এসব খামারে ও গৃহস্থ পরিবারে ২৭ লাখ ৩০ হাজার ৪৪২টি হাঁস রয়েছে। সারা বছরের জেলায় হাঁসের ডিম উৎপাদন হয় ২৭ কোটি ৫৫ লাখ ১১ হাজার ১৮৬টি। জেলায় ডিমের  চাহিদা রয়েছে ২৫ কোটি ৬৬ লাখ ৬৯ হাজার ৭১২টি। ফলে উদ্বৃত্ত থাকে এক কোটি ৮৮ লাখ ৪৭৪ হাজার ডিম।

প্রতিটি ডিম ১০ টাকা হারে ২৭৫ কোটি ৫১ লাখ ১১ হাজার ৮৬০ টাকার ডিম উৎপাদিত হয় জেলায়। প্রায় ২০ কোটি টাকার ডিম উদ্বৃত্ত রয়ে যায়। হাঁসের খামার

স্থানীয় হাঁস খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত হাঁসের বিচরণ ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে পড়ে। এ সময় হাওরের জমিতে ফসল উৎপাদন করায় হাঁস চরে খেতে পারে না। খামারিরা নিজেদের উদ্যোগে হাঁসের খাদ্যের সংস্থান করেন। তবে খোলা হাওরে বা বিলে হাঁস ঘুরে ঘুরে জলজ উদ্ভিদ, মাছসহ সব ধরনের প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণ করতে পারে। এই সময় হাঁস এসব খাদ্য থেকে বঞ্চিত হয়ে ডিম পাড়া বন্ধ করে দেয়।

অন্যদিকে এপ্রিল থেকে পুরো নভেম্বর মাস পর্যন্ত হাঁসের কোনও ধরনের খাদ্য সংকট থাকে না। তাই প্রচুর পরিমাণে ডিম দেয়।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের রাজঘাট গ্রামের হাঁসের খামারি মুক্তার আলী জানান, ছোট ছোট জলমহাল সরকার ইজারা না দিলে এগুলোতে হাঁস চরে খেতে পারতো। ফলে প্রাকৃতিক উৎস থেকে হাঁসের সুষম খাবার পেতো। তখন ১২ মাসের মধ্যে টানা ১০ মাস হাঁস থেকে ডিম পাওয়া যেতো।

ফতেহপুর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের হাঁসের খামারি আব্দুল কাদির বলেন, সরকার ছোট ছোট জলমহাল ইজারা দিয়ে যে টাকা পায়, হাস পালনের জন্য এগুলো উন্মুক্ত করে দিলে ডিমের উৎপাদন আরও বাড়তো। এতে দেশের গরিব মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হতো।

দোয়ারাবাজার উপজেলা বাংলাবাজার ইউনিয়নের উস্তাঙ্গেরগাঁও গ্রামের খামারি হাফসা খাতুন বলেন, প্রশিক্ষণ নিয়ে হাসের খামার করতে পারলে ভাগ্য বদলে দেওয়া সম্ভব। ধান মাছ চাষের চেয়েও হাঁস পালনে লাভ বেশি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওর এলাকায় হাঁস পালনের জন্য বিপুল সম্ভাবনাময় স্থান। জেলায় অসংখ্য খালবিল হাওর জলাশয় রয়েছে। যেগুলোতে হাঁস পালন করা সম্ভব। সরকার যদি হাঁস পালনের জন্য একটি নির্দিষ্ট এলাকা নির্ধারণ করে দেয় তাহলে এ জেলার মানুষ হাঁস পালন করে নিজেদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারবেন।

 

/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
দেশে আগ্রাসী শাসন চলছে: দিলারা চৌধুরী
দেশে আগ্রাসী শাসন চলছে: দিলারা চৌধুরী
বিকল্প অর্থনীতি ও গ্রাম্য কায়কারবার
উপন্যাসবিকল্প অর্থনীতি ও গ্রাম্য কায়কারবার
বিপুল পরিমাণ নকল জুস জব্দ, কারখানার মালিকের কারাদণ্ড
বিপুল পরিমাণ নকল জুস জব্দ, কারখানার মালিকের কারাদণ্ড
লিগের মাঝপথে গোপনে কানাডায় কেন বাংলাদেশি ফুটবলার!
লিগের মাঝপথে গোপনে কানাডায় কেন বাংলাদেশি ফুটবলার!
সর্বাধিক পঠিত
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু