রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার দুর্গাপুর রশনিপাড়া গ্রামে শিমু বেগমকে (২০) পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনায় প্রধান আসামি তার স্বামী দুলাল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শনিবার (১৫ এপ্রিল) জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রংপুর র্যাব-১৩ মিডিয়া অফিসার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশীর আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব জানায়, গত ৭ মার্চ রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানাধীন যৌতুকের দায়ে ভিকটিম শিমু বেগমকে (২০) হত্যার শিকার হন। স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, শিমুর সঙ্গে পারিবারিকভাবে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার দুর্গাপুর রশনিপাড়া গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়ার দেড় বছর আগে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী, শ্বশুর এবং শাশুড়ি যৌতুকের জন্য বিভিন্নভাবে শিমুকে নির্যাতন করতে থাকে। বিয়ের সময় দুলালকে একটি ডিসকভার মোটরসাইকেল, ঘরের আসবাব এবং নগদ দুই লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন না যেতেই স্বামী দুলাল ও তার বাবা-মাসহ স্বজনরা আরও এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শিমুকে তারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল। এরই জের ধরে ৭ মার্চ গৃহবধূ শিমুকে বেদম মারধর করে গুরুতর আহত করে তারা। এক পর্যায়ে স্বামী আসামি দুলাল, শ্বশুর বাবুল, শাশুড়ি দুলালী শিমুকে শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এরপর পুরো ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আত্মহত্যা বলে চাপিয়ে দেওয়ার জন্য শিমুর মুখে কীটনাশক বিষ ঢেলে দেয়।
এ ঘটনায় নিহত শিশু বেগমের বাবা মনির উদ্দিন বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় মামলা দায়ের দায়ের করেন।
ঘটনার পর পরই আসামিরা আত্মগোপন করে। মামলার পর থেকে র্যাব এ বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানা এলাকায় র্যাব-১৪, জামালপুরের সঙ্গে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে প্রধান আসামি দুলালকে গ্রেফতার করে।
র্যাব-১৩ মিডিয়া বিভাগের পরিচালক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুলাল হত্যার কথা স্বীকার করেছে। ঘটনার দিন সে অন্য আসামিদের সহায়তায় পরিকল্পিতভাবে শিমুকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে এবং পরে মুখে বিষ ঢেলে দেয়।
তিনি আরও জানান, মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে।