গাজীপুরের শ্রীপুর থানাকে টাউট, বাটপার ও দালালমুক্ত ঘোষণা করে সাইনবোর্ড সাঁটিয়েছে পুলিশ। বুধবার (১৭ মে) থানার সামনে সাইনবোর্ডটি সাঁটানো হয়। এমন উদ্যোগে শ্রীপুরবাসীর মনে আশার সঞ্চার হয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। তবে কাজে প্রমাণ দেখতে চান তারা।
শ্রীপুরের তেলিহাটি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী মনসুর মানিক বলেন, ‘উদ্যোগটি ভাল। পুলিশ আন্তরিক হলে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদকসেবী নির্মূল করতে পারবে। এটি বাস্তবায়ন করতে হলে কাজে তার প্রতিফলন দেখাতে হবে। এরকম পরিবেশ সৃষ্টি হলে সমাজের অসহায় মানুষ হয়রানি থেকে রক্ষা পাবে এবং ন্যায় বিচার পাবে। টাউট-বাটপার-দালালদের চিহ্নিত করার দায়িত্বও পুলিশের।’
জাতীয় নদী রক্ষা কমিটির সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, ‘সবার জন্য ওসির দরজা খোলা এমন ঘোষণাও সকল স্তরের মানুষকে জানাতে হবে। শুধু ওসি নয়, উপপরিদর্শক (এসআই) এবং সহকারী উপপরিদর্শকদের (এএসআই) ক্ষেত্রে অনুরূপ ব্যবস্থা থাকতে হবে। তবেই লক্ষ্যে উপনীত হওয়া সম্ভব।’
বরমী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘এতে বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষ উপকৃত হবে। হয়রানির শিকার থেকে রক্ষা পাবে অনেক অসহায় মানুষ।’
উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজ বলেন, ‘উদ্যোগটা ভাল, তবে কাজে প্রমাণ দিতে হবে।’
অ্যাডভোকেট ফরিদ হোসেন আকন্দ বলেন, ‘নতুন ওসি হিসেবে যোগদানের পর কয়েকটি ঘটনা প্রত্যক্ষ করে কিছু নমুনা পাওয়া গেছে। ওসি ইচ্ছা করলেই তার পুলিশ সদস্যদেরকে নিয়ে মানুষকে উন্নত সেবা দিতে পারবেন।’
মাওনা চৌরাস্তা বণিক সমিতির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম রতন বলেন, ‘যদি ঘোষণা অনুযায়ী এ সেবা শ্রীপুরবাসীকে দিতে পারে তাহলে ভালো। আমরা আশা করি এ ঘোষণার বাস্তবায়ন হোক এবং ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা বাস্তবায়নে শতভাগ সহযোগিতা থাকবে।’
শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক কামাল ফকির বলেন, ‘আমি অবশ্যই চাই শ্রীপুর মডেল থানা টাউট, বাটপার ও দালাল মুক্ত হোক। আগে থানা কখনো এসব মুক্ত ছিল না। আমরা এ ঘোষণার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।’
শ্রীপুরের মাওনা পিয়ার আলী কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক আহাম্মাদুল কবির বলেন, ‘থানা টাউট, দালাল ও বাটপার মুক্ত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আমার মনে হয় তারা (পুলিশ) আরও দায়িত্বশীল হতে চাচ্ছে। একজন মানুষকে থানায় যাওয়ার সময় কাউকে যেন সঙ্গে করে নিয়ে যেতে না হয়। সহজে থানায় প্রবেশ করতে পারে। সেটি আগে নিশ্চিত করতে হবে।’
শ্রীপুর থানার ওসি আবুল ফজল মো. নাসিম বলেন, ‘দেড় মাসের বেশি সময় হয়েছে আমি এ থানায় যোগদান করেছি। মানুষ সরাসরি থানায় এসে যেকোনো অভিযোগ দিতে পারবে। তাদের সুনির্দিষ্ট তথ্যর ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছোটখাটো যে কোনও সমস্যা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করবে পুলিশ। আমি বদলী হয়ে গেলেও নতুন যে অফিসার আসবেন তিনি এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন আশা করি।’