X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে করতে সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের নোটিশ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
২২ আগস্ট ২০২৩, ২১:৪৭আপডেট : ২২ আগস্ট ২০২৩, ২১:৪৭

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে করতে এক সহকারী শিক্ষককে নোটিশ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। গত ২৬ জুলাই নোটিশ দেওয়া হলেও সম্প্রতি বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায়ও তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।

নোটিশ পাওয়া শিক্ষক রনি প্রতাপ উপজেলার সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে ওই বিদ্যালয়ে যোগ দেন গোপালপুর উত্তরপাড়ার বাসিন্দা রনি প্রতাপ পাল। গত ২৬ জুলাই তাকে ওই নোটিশ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।

নোটিশে বলা হয়, ‘বিদ্যালয়ে যোগদানের পর আপনাকে বারবার মৌখিকভাবে তাগিদ দিয়েছি বিয়ে করার জন্য। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয়, কয়েক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও আপনি বিয়ে করেননি। বিদ্যালয়টিতে সহশিক্ষা চালু রয়েছে। অভিভাবকরা অবিবাহিত শিক্ষক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। সুতরাং বিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিবাহের কার্য সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে পাক্কা নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

নোটিশটি পাওয়ার দুই দিন পর সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল প্রধান শিক্ষককে লিখিত জবাব দেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার অভিভাবকরা আমার বিয়ের চেষ্টা করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দুদের বিয়ের পাত্রপাত্রী বাছাইয়ে গোত্র বা বর্ণের বিষয় রয়েছে। এ ছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রাবণ থেকে কার্তিক পর্যন্ত বিয়ে করাটা শুভ মনে করেন না। সুতরাং পারিবারিক ও ধর্মীয় রীতির কারণে আগামী অগ্রহায়ণ মাসে অভিভাবকেরা আমাকে বিয়ে করাবেন বলে জানিয়েছেন।’

শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল জানান, প্রধান শিক্ষক স্কুলের সব স্টাফকে ডেকে সবার সামনে তাকে বলে দিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিয়ে না করলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হবে। হয়রানির ভয়ে তিনি গত ৩০ জুলাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, তিনি অবিবাহিত থাকলেও কোনও অভিভাবক বা শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি। এদিকে, বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলামের সই জাল করে চেকের মাধ্যমে স্কুলের বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে। সরকারি তদন্তে যাতে তিনি যেন সাক্ষ্য না দেন, সে জন্য তাকে হয়রানি করা হচ্ছে।

ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘রনি ভালো শিক্ষক। তাকে নিয়ে কেউ কখনও কোনও প্রশ্ন তোলেননি। দুটি সরকারি তদন্তে তিনি মিথ্যা সাক্ষী দিতে না চাওয়ায় প্রধান শিক্ষক তাকে এমন লজ্জাজনক নোটিশ দিয়ে হয়রানি করছেন।’

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সহশিক্ষা চলমান রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানে অবিবাহিত শিক্ষক থাকলে নানা অসুবিধা হতেই পারে। এ জন্য তাকে দ্রুত বিয়ে করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’

গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা জানান, ঘটনাটি খুবই লজ্জাজনক। এভাবে নোটিশ করার এখতিয়ার কোনও প্রধান শিক্ষকের নেই।

/এমএএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
থ্রিলার বনাম হরর: প্রেক্ষাগৃহে নতুন দুই সিনেমা
এ সপ্তাহের ছবিথ্রিলার বনাম হরর: প্রেক্ষাগৃহে নতুন দুই সিনেমা
অপতথ্য ও অর্ধসত্যের মাঝে মুক্ত গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ
অপতথ্য ও অর্ধসত্যের মাঝে মুক্ত গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ
নিখিল কৃষ্ণ মজুমদারের সাক্ষাৎকার
নিখিল কৃষ্ণ মজুমদারের সাক্ষাৎকার
মাজার জিয়ারত করতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরছেন একই পরিবারের ৪ জন
মাজার জিয়ারত করতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরছেন একই পরিবারের ৪ জন
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা