ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘হাজী শরীয়তুল্লাহর জামানায় ব্রিটিশরা কৃষকদের ওপর জুলুম করতো। ব্রিটিশরা কৃষকদের জোর করে নীল চাষ করাতো আর সেই নীল কম দামে কিনে নিতো। তাতে কৃষকরা মজুরিও পেতেন না। সেই জুলুমের বিরুদ্ধে ফরায়েজী আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন হাজী মোহাম্মদ শরীয়ত উল্লাহ। গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। তিনি এই বাংলার ও উপমহাদেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা।’
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে মাদারীপুরের শিবচরে হাজী শরীয়তুল্লাহর আস্তানায় বাহাদুরপুর মাদ্রাসার ৮০তম ফরায়েজী আন্দোলনে ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা এ অনুষ্ঠানে হাজী শরীয়তুল্লাহর অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশে যে হাজার হাজার মানুষের মাথায় টুপি, মুখে দাড়ি, নামাজের প্রতি আগ্রহ, রোজার প্রতি আগ্রহ– এসব হাজী শরীয়তুল্লাহ সাহেবের অবদান, পীর সাহেবের অবদান। সেই সময়ের ইতিহাস মানুষ ভুলে গেছে। আবার সেই ইতিহাসকে আমাদের পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ফরায়েজী আন্দোলন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পাবে। আপনাদের নিয়ে আমি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলবো। অন্যান্য দল যদি পায়, ছোট ছোট দল যদি পায়, অজ্ঞাত দল যদি পায় তাহলে ফরায়েজী আন্দোলন পাবে না কেন। আসুন আমরা ভেদাভেদ ভুলে যাই। সমস্ত মুসলমানকে অন্তরের মধ্যে জায়গা দিই। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন। ঐক্যই শক্তি, শক্তিই শান্তি।’
খালিদ হোসেন আরও বলেন, ‘ “হাজী শরীয়তুল্লাহর অবদান বর্ণনা করো”, “ফরায়েজি আন্দোলন সম্পর্কে তোমার অভিমত ব্যক্ত করো”, আগে অনার্স-মাস্টার্সে এরকম প্রশ্ন আসতো। নানা কারণে এই জাতীয় প্রশ্ন এখন এই সাবজেক্টগুলোয় আর সিলেবাসে নেই। আমরা আশা করি, আগামীতে নতুন সিলেবাসে ফরায়েজী আন্দোলন, হাজী শরীয়তুল্লাহ ছাহেব রহমাতুল্লাহ আলাইহির জীবনী এবং তাদের কালজয়ী অবদান সিলেবাসভুক্ত হবে।’
এ সময় হাজী শরীয়তুল্লাহর আস্তানার গদিনসীন পীর আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান, ওলামায়ে কেরাম, শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ এবং ফরায়েজী আন্দোলনের নেতাকর্মীসহ লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন।