বগুড়ার ধুনটে দুই জনকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনাকারী রাজশাহী মেট্রোপলিটন (আরএমপি) ডিবি পুলিশের কনস্টেবল ওহাব আলীকে (২৮) গ্রেফতার করা হয়েয়ে। ধুনট থানা পুলিশ সোমবার রাতে তাকে রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ওহাবকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে এক সাব-ইন্সপেক্টরসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য ও এক গাড়িচালককে গ্রেফতার করা হয়। তাদের ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মামলা সূত্র ও পুলিশ জানায়, কনস্টেবল ওহাব আলী বগুড়ার ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে। তার নিজ গ্রামের সেলিম শেখের ছেলে রাব্বি শেখ (১৯) এবং একই গ্রামের মৃত শেরবান খাঁর ছেলে জাহাঙ্গীর খাঁ (২৪) ফ্রিল্যান্সার। কনস্টেবল ওহাব তাদের দুজনকে ক্যাসিনো ব্যবসায়ী হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি দুজনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করেন সহকর্মীদের সঙ্গে। রাজশাহী ম্রেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ডিবির এসআই শাহীন মোহাম্মদ অনু ইসলামের নেতৃত্বে কনস্টেবল ওহাব আলী, কনস্টেবল রিপন মিয়া, কনস্টেবল আবুল কালাম আজাদ, কনস্টেবল মাহবুব আলম, কনস্টেবল বাশির আলী ও সিভিল মাইক্রোবাস ড্রাইভার মেহেদী হাসান ২৩ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাইক্রোবাসে বগুড়ার ধুনটের দীঘলকান্দি গ্রামে আসেন। তারা ফ্রিল্যান্সার রাব্বী ও জাহাঙ্গীরকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে অপহরণের করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান।
রাত ২টার দিকে তাদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ১২ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরে বিকাশের মাধ্যমে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে তাদের শেরপুর উপজেলায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর ডিবি পুলিশের সদস্যরা মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে অপহৃতদের পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি ধুনট থানা ও হাইওয়ে পুলিশ কুন্দারহাট থানাকে অবহিত করেন।
এদিকে, পুলিশ সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে হাইওয়ে পুলিশ কুন্দারহাট থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামানের নেতৃত্বে টহল পুলিশ বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খরনা ইউনিয়নের বীরগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ধাওয়া করে মাইক্রোবাসটি থামায়। এরপর পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছে চাঁদাবাজির দুই লাখ টাকা, একটি ওয়াকিটকি, একটি হ্যান্ডকাফ ও সাতটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এর আগে কনস্টেবল ওহাব আলী সটকে পড়েন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী রাব্বীর বাবা সেলিম শেখ ধুনট থানায় ছয় পুলিশ সদস্য ও তাদের গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে ধুনট থানায় মামলা করেন। সোমবার দুপুরে ছয় জনকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ অপরাধে জড়িত থাকায় আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান সোমবার বিকালে পাঁচ ডিবি সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
ধুনট থানার ওসি জানান, অপরাধে জড়িত থাকায় আরএমপি ডিবি পুলিশের কনস্টেবল ওহাব আলীকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হতে পারে।