পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়িবহরে থাকা সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে গারো পাহাড়ের ভেতর পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনে পরিদর্শনে যাওয়ার সময় এ হামলায় কমপক্ষে ছয় জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। সোমবার (২৬ মে) দুপুরে উপজেলার দাওধারা কাটাবন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহত সাংবাদিকরা হলেন– এখন টিভির জাহিদুল খান সৌরভ, সময় টিভির ভিডিও জার্নালিস্ট বাবু চক্রবর্তী, বাংলা টিভির নাঈম ইসলাম, বাংলাদেশের খবরের শাহরিয়ার শাকিরসহ আরও দুজন।
স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে গারো পাহাড়ঘেরা বনভূমির ভেতর পর্যটনকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা এবং তা ঘিরে বন বিভাগের আপত্তির প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান ওই এলাকা পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, ‘বনের জমিতে কোনও পর্যটনকেন্দ্র হবে না। ওই এলাকায় হাতির জন্য অভয়ারণ্য গড়ে তোলার পরিকল্পনা চলছে।’
জানা গেছে, তার এই ঘোষণার পরই স্থানীয় লোকজনের একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পর্যটনকেন্দ্রের পক্ষে ও বিপক্ষে থাকা দুই পক্ষ উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা গাড়িবহরের সঙ্গে থাকা সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে শেরপুরের ওই সাংবাদিকরা আহত হয়।
বন বিভাগের তথ্য মতে, শেরপুরের গারো পাহাড়সংলগ্ন তিনটি উপজেলার তিনটি রেঞ্জে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে প্রায় ২১ হাজার একর বনভূমি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ বনভূমি বর্তমানে দখলদারদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। সম্প্রতি স্থানীয় প্রশাসন এই বনাঞ্চলের ২২৩ একর খাস জমিতে পর্যটনকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়, যার মধ্যে ৩২ একর জমি সংরক্ষিত পাথর মহাল হিসেবেও চিহ্নিত। বন বিভাগ এই উদ্যোগে আপত্তি জানালে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই বনভূমি রাষ্ট্রের সম্পদ, এটি কোনোভাবেই পর্যটনের নামে ধ্বংস হতে দেওয়া যাবে না।’ একই সঙ্গে এই বনভূমিতে হাতির অভয়াশ্রম করার পরিকল্পনা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, পরিবেশ উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক ও শেরপুর প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ।