বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে কিডনি ডায়ালাইসিস। বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে এই চিকিৎসা অনেক ব্যয় বহুল হলেও সরকারি এই হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস করা যাবে মাত্র ২০ হাজার টাকায় (৬ মাসের প্যাকেজ)। প্রতিষ্ঠার ৫২ বছরে এই প্রথম শের-ই বাংলা মেডিক্যালে কিডনি ডায়ালাইসিস শুরু হওয়ায় খুশি এখানকার রোগী ও চিকিৎসকরা।
মঙ্গলবার (১২ মে) বেলা ১২টায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাহেরচরের খসরু আলম সিকদার নামে এক রোগীর কিডনি ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে এই হাসপাতালে চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। এ সময় হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকীর হোসেন, সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন, নেপ্রোলজি বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আলী রুমি এবং রেজিস্ট্রার ডা. মানবেন্দ্র দাসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ জানুয়ারি সরকারের কেন্দ্রীয় ওষুধাগার থেকে ১০টি কিডনি ডায়ালাইসিস মেশিন পাঠানো হয় শের-ই বাংলা মেডিক্যালে। জাপানের নিপ্রো কোম্পানির তৈরি এই ১০টি মেশিনের দাম প্রায় এক কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এসব মেশিনের পাশাপাশি সহায়ক হিসেবে ৫টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ২টি অটোমেটিক ডায়ালাইজার রিফ্রেশার এবং ডায়ালাইসিস বেডসহ অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠানো হয়।
হাসপাতালের তৃতীয় তলার মেডিসিন বিভাগের পাশে সম্প্রতি মেশিনারিজগুলো স্থাপন করা হয়। এরপর মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে কিডনি ডায়ালাইসিস চালু হলো। বেলা ১২টায় শুরু হওয়া প্রথম রোগীর কিডনি ডায়ালাইসি শেষ হয় বিকাল চারটায়।
হাসপাতালের নেপ্রোলজি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. মানবেন্দ্র দাস জানান, কিডনি রোগীদের ছয় মাসে (প্রতি সপ্তাহে ২ বার) ৪৮ বার ডায়ালাইসিসের জন্য প্যাকেজ প্রোগ্রামে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো ২ লাখ ৪০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। কিন্তু উন্নত মেশিনারিজ দিয়ে শের-ই বাংলা মেডিক্যালে ছয় মাসের প্যাকেজ ডায়ালাইসিস করা যাবে মাত্র ২০ হাজার টাকায়।
নেপ্রোলজি বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আলী রুমি বলেন, ‘করোনার কারণে আপাতত সংক্ষিপ্ত পরিসরে ডায়ালাইসিসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই ইউনিটে ৪০টি ডায়ালাইসিস মেশিন স্থাপন করা হবে। শের-ই বাংলা মেডিক্যালে কিডনি প্রতিস্থাপন ছাড়াও কিডনির অন্যান্য সব রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান তিনি।