ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলেছে পাকিস্তান। এই পদক্ষেপ ২৪ কোটিরও বেশি মানুষের জীবনের জন্য হুমকি তৈরি করছে বলে জাতিসংঘকে সতর্ক করেছে দেশটি। শুক্রবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় ‘সশস্ত্র সংঘাতে পানির সুরক্ষা’ নিয়ে জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এমন সতর্কবাণী উচ্চারণ করে পাকিস্তান। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।
পাকিস্তান বিশ্ব সম্প্রদায়কে সতর্ক করে বলেছে, ভারতের এমন পদক্ষেপ যেকোনও মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনতে বা গোটা অঞ্চলে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই এখনই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী উপ প্রতিনিধি উসমান জাদুন বলেন, ‘এটি আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার আইন, চুক্তি আইন এবং প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।’ তিনি স্লোভেনিয়ার উদ্যোগে আহ্বান করা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বক্তব্য রাখছিলেন।
জাদুন বলেন, আমরা ভারতের বেআইনি সিদ্ধান্তের কড়া নিন্দা জানাই এবং ভারতকে এর আইনি দায়বদ্ধতা মেনে চলার আহ্বান জানাই। ২৪ কোটি পাকিস্তানির প্রাণরক্ষা করা নদীগুলোর প্রবাহ বন্ধ, সরানো বা সীমিত করার যে কোনও প্রচেষ্টাকে আমরা কখনোই মেনে নেব না।’
তিনি ভারতীয় নেতাদের ‘পাকিস্তানের মানুষকে না খেয়ে রাখার’ মতো বিপজ্জনক মন্তব্যকেও উদ্বেগজনক উল্লেখ করে বলেন, এটি ‘চরম বিপজ্জনক ও বিকৃত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।’
জাতিসংঘ ফোরামে জল সম্পদকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান।
জাদুন যুদ্ধকালীন সময়ে পানি সম্পদের সুরক্ষায় বৈশ্বিক উদ্যোগকে পাকিস্তানের পূর্ণ সমর্থনের কথা পুনরায় জানান এবং পানি বিষয়ে রাজনৈতিক বা সামরিক উদ্দেশ্যকে প্রতিহত করার জন্য ‘দৃঢ়, নীতিনিষ্ঠ ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান’ নেওয়ার আহ্বান জানান।
শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের “সশস্ত্র সংঘাতে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা” বিষয়ক বৈঠকে অংশ নেয় ভারত ও পাকিস্তান।
বৈঠকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসিম ইফতিখার আহমেদ সাম্প্রতিক সংঘর্ষে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেসামরিক এলাকায় হামলার নিন্দা করেন।
অন্যদিকে ভারতের রাষ্ট্রদূত পারভতনেনি হরিশ পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদকে রাষ্ট্রনীতির অংশ বানানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।