পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা পরিষদে ইউএনও’র অফিসের পাশে দুই ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কনকদিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও দাশপাড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন।
নাম না প্রকাশের শর্তে এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, ‘‘ইউএনও কক্ষের পশ্চিম পাশের কক্ষে কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বসে ছিলেন। এ সময় অপর চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন তার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। দাশপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেনকে দেখে বলেন শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘কিরে শালা কই যাও?’। জবাবে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘দুলাভাই সামনে যাই’। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীরের গালে চড় মারেন শাহিন। এতে তাদের দুজনের মধ্যে মারামারি বাধে। পরে চিৎকার শুনে ইউএনও মো. আল আমিন তার কক্ষ থেকে বের হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে দুই চেয়ারম্যানকে দুই দিকে সরিয়ে দেন। এর একটু পরই উপজেলা পরিষদ চত্বরে দুই চেয়ারম্যানের অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।’’
এ বিষয়ে দাশপাড়ার চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘চেয়ারম্যান শাহিন আমার ওপর হামলা করেছেন। যা উপজেলা পরিষদের সিসি ক্যামেরায় চেক করলে পাওয়া যায়। ঘটনাটি আমি মৌখিকভাবে বাউফল থানার ওসিকে জানিয়েছি। লিখিতভাবেও জানাবো। এ ছাড়া ইউএনওর মাধ্যমে লিখিতভাবে বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানাবো।’
চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘‘আমি একটি পে-অর্ডার আনার জন্য উপজেলা পরিষদে যাই। তখন উনি আমাকে দেখে তার রাসেল নামের এক অনুসারীকে বলেন, ‘ওই গুণ্ডা যায়’। আমিও তখন তাকে মন্দ কথা বলি। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর বলেন ধর শ্যালাকে। তার অনুসারী রাসেল চাকু বের করে আমাকে আঘাত করার চেষ্টা করলে আমি কিছুটা সরে যাই। এ সময় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর পিস্তল বের করলে আমি চিৎকার দিলে ইউএনও এসে আমাকে রক্ষা করেন। সব ঘটনা সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড আছে।’’
বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, ‘দুই চেয়ারম্যানই মৌখিকভাবে ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছেন। এ ছাড়া ইউএনও কার্যালয় থেকে আমাকে ঘটনাটি জানানোর পর আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে লিখিতভাবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনও অভিযোগ করেননি।’
ইউএনও মো. আল আমিন বলেন, ‘চিৎকার শুনে প্রথমে আমি মনে করেছি, অফিসের বাইরে হয়তো কোনও ঘটনা ঘটেছে। পরে যখন বুঝলাম, আমার অফিস কক্ষের কাছে ডাকাডাকি হচ্ছে, তখন আমি গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। পরে দুই চেয়ারম্যানকে দুই দিকে সরিয়ে দেই। ঘটনাটি সত্যিই দুঃখজনক। জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের এ আচরণ কাম্য ছিল না। ঘটনাটি আমি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি।’
সালিশ করতে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কিশোরীকে জোরপূর্বক বিয় করে এর আগেও আলোচনায় আসেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার।