ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গত ৩০ অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার বিএনপি নেতা আমিরুল হোসেন চকদারের মুক্তির দাবিতে থানায় গিয়েছিলেন স্থানীয় হিন্দু নেতারা। বুধবার সকালে আমিরুলের গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় কয়েকশ পরিবারের সঙ্গে নাসিরনগর থানায় গিয়ে হিন্দু নেতারা আমিরুলের মুক্তি দাবি করেন। তাদের দাবি, হামলার দিন হিন্দুদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন আমিরুল। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল জ্যোতি দত্ত বলেন, 'বিএনপি নেতা আমিরুল আমার প্রতিবেশী। ঘটনার দিন তিনি আমার বাড়িটি রক্ষা করেছিলেন। পুলিশ কেন তাকে ধরে নিয়ে আসল কিছুই বুঝতে পারছি না।’
নাশকতার অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে দত্তপাড়া নিজ বাড়ি থেকে আমিরুলকে আটক করে পুলিশ।
জানা গেছে, এলাকার লোকজনের দাবির প্রেক্ষিতে দুপুরে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল জ্যোতি দত্ত এবং সাধারণ সম্পাদক, হরিপদ পোদ্দার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অঞ্জন দেব বিএনপি নেতাকে ছাড়িয়ে আনার জন্য থানায় যান। এ সময় হরিপদ পোদ্দার বলেন, ‘বিএনপি নেতা আমিরুল এলাকায় ক্লিন ইমেজের লোক। তিনি কোনও অপরাধ করতে পারেন এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।’
উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান অঞ্জন দত্ত বলেন, ‘জনগণের রাজনীতি করি। তাই জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে থানায় আসি। তিনি (আমিরুল) বিএনপির রাজনীতি করলেও ভদ্রবলেই জানি।’
আমিরুলের বড় ভাই কামরুল চকদার বলেন, ‘আমার ভাইকে কেন পুলিশ নিয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারছি না। কারও সাহায্যে এগিয়ে গিয়ে যদি বিপদে পড়তে হয়, পুলিশের হাতে গ্রেফতার হতে হয়, তাহলে ভবিষতে কারও সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসবে না।’
স্থানীয়দের দাবি উপেক্ষা পরে বুধবার দুপুরে গত ৩০ অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলার একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। এছাড়া আমিরুলের গ্রেফতারের কারণ নিয়েও অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। নাসিরনগর থানার ওসি আবু জাফর ৩০ অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে আমিরুলকে গ্রেফতারের দাবি করেন। পরে সাংবাদিকরা ভিডিও ফুটেজে আমিরুলের ছবি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি আগের দাবি থেকে সরে এসে বলেন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই দিনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
/এএ/এফএস/