প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা প্রতিকূলতা শেষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার উদ্বোধন হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত দ্বিতীয় আশুগঞ্জ -ভৈরব রেলসেতু। বেলা ১১টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সেতুটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় রেল সেতুটি চালু হলে সিলেট-চট্টগ্রামসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রীসহ একাধিক কর্মকর্তা।
আশুগঞ্জ-ভৈরব এলাকার ব্যবসায়ী মূছা মিয়া, মোশারফ হোসেন, বিল্লাল হোসেন ও দিদার আলম জানান, উদ্বোধনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করায় আমরা আশুগঞ্জ-ভৈরববাসী অনেক খুশি। আগে একটা ট্রেনের জন্য আরেকটা ট্রেনকে দাঁড়াতে হতো, এখন আর সে সমস্যা থাকবে না। এতে আমাদের যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে খুব সুবিধা হবে।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ম্যানেজার ও দ্বিতীয় রেলসেতুর প্রকল্প পরিচালক আব্দুল হাই সাংবাদিকদের জানান, ২০১০ সালে সেতু নির্মাণের বিষয়টি একনেকে পাশ হয়। পরে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ও এফকনস যৌথভাবে পুরনো রেলসেতুর দক্ষিণ পাশে দ্বিতীয় ভৈরব রেলসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে। প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী ২০১৬ সালের জুন মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা প্রতিকূলতার কারণে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয় চলতি বছরের জুন মাসে। এর ফলে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি পণ্য পরিবহনেও সময় অনেক কম লাগবে। বাড়বে ট্রেনের সংখ্যাও।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা আহমদ বলেন, ‘সেতু উদ্বোধন হলে একদিকে যেমন ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন হবে তেমনি যাত্রীদের ভোগান্তিও কমবে। এছাড়াও সেতুটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যপক ভূমিকা রাখবে।’
ভৈরবের উপজেলা চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘দুইটি লাইন হওয়ায় এখন ট্রেনগুলোকে আর অপেক্ষা করতে হবে না। এতে সময়ও অনেক বাঁচবে। এবং এলাকার মানুষের ভোগান্তি কমবে।
সেতুর প্রকৌশলী নারায়ণ ঝাঁ বলেন, ‘অনেক লোড নিয়ে সেতুর উপর দিয়ে একশ’ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।’
রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া সফরকালে জানান, বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটি উদ্বোধন করবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘সেতুটি অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। মোট ১২টি পিলারের উপর নির্মিত এক দশমিক দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং সাত মিটার প্রস্থের সেতুটি তৈরি করতে ব্যয় হয়েছে ৫৬৭ কোটি টাকা।’
আরও পড়ুন: ভেলায় চড়ে বাংলাদেশে ৫২ রোহিঙ্গা