X
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

‘ঠকানোর দিন শেষ, নারীরাই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে যাবেন’

জসিম উদ্দিন মজুমদার, খাগড়াছড়ি
০২ মে ২০১৮, ০৪:০৫আপডেট : ০২ মে ২০১৮, ০৪:১৩

ধানক্ষেতে কাজ করছেন নারী শ্রমিকরা খাগড়াছড়ি জেলায় কর্মক্ষেত্রে পুরুষদের পাশাপাশি নারী শ্রমিকেরাও সমান অবদান রাখছেন। কিন্তু, নারীরা সমান মজুরি পাচ্ছেন না বলে তাদের অভিযোগ। কর্মক্ষেত্রে মজুরি বৈষম্য কমানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

নারী শ্রমিকদের এই দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নারী শ্রমিকের বৈষম্য কমছে। শিক্ষাক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। তারা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন। এখন তাদেরকে ঠকানোর দিন শেষ হয়ে আসছে। আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন। নারীরাই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে যাবেন।’

জেলা প্রশাসন, জেলা পরিসংখ্যান অফিস ও জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে খাগড়াছড়ি জেলার ৯ উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদের জনসংখ্যা প্রায় ৭ লাখ। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার লোক প্রাপ্ত বয়স্ক এবং এর মধ্যে কর্মক্ষম ও প্রাপ্তবয়স্ক নারীর সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার। খাগড়াছড়িতে বাঙ্গালি, চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর বসবাস। বাঙ্গালি ও চাকমা সম্প্রদায়ের নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ হলেও মারমা এবং ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের শতভাগ নারীই প্রত্যক্ষভাবে বিভিন্ন কর্মে জড়িত। গড়ে মোট নারীর ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ বিভিন্ন শ্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন। জেলার প্রায় সকল কর্মক্ষেত্রে আছে নারী শ্রমিক।

কাপড় বুনছেন নারী শ্রমিক খাগড়াছড়ি সদরের যাদুরামপাড়া এলাকার নারী শ্রমিক রাজকুমারী ত্রিপুরা বলেন, ‘পুরুষদের মতো সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করি। পুরুষেরা অনেক সময় কাজেও ফাঁকি দেন। তারপরও দিন শেষে তারা ৪৫০ থেকে ৫০০টাকা পান। আর আমরা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পাই।’

আরও পড়ুন: রাজশাহীর নারী শ্রমিকেরা মজুরি বৈষম্যের শিকার

খাগড়াছড়ি সদরের কালাডেবা এলাকার নাইম্রা মারমা বলেন, ‘পুরুষ শ্রমিকেরা ৪০০ থেকে ৪৫০টাকা মজুরি পান, আমাদের দেওয়া হয় ২৫০ টাকা।’

দিঘীনালা উপজেলার প্রত্যন্ত নারাইছড়ি এলাকার নারী শ্রমিক মিতা চাকমা বলেন, ‘আমাদের এলাকার প্রায় সব নারীই কৃষি ক্ষেত্রে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। এখানে পুরুষদেরকে ৩০০ এবং নারীদেরকে ২০০ টাকা করে দেওয়া হয়।’

খাগড়াছড়ি সদরের আলেয়া খাতুন বলেন, ‘নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। পুরুষদের চেয়ে কম মজুরি পাই।’

ব্যবসায়ে নারীদের অংশগ্রহণ খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সাবেক উপ-পরিচালক তরুন ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘কৃষিক্ষেত্রে প্রায় ৮০ ভাগ শ্রমিকই নারী। এরা বরাবরই কম মজুরি পায়। নারী-পুরুষের চলমান মজুরি বৈষম্য শেষ হওয়া দরকার।’

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, ‘নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য দীর্ঘদিনের। পুরুষশাসিত সমাজে নারী শ্রমের প্রতি অবহেলা, বৈষম্যমূলক মনোভাব, নারীদের সহনশীল মানসিকতা ও পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানই এর জন্য দায়ী। বর্তমান সরকার এই বৈষম্য দূর করার জন্য কাজ করছে। চাকরিসহ সব কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ সমান নিশ্চিত করা হয়েছে। বেতন-ভাতা ও মজুরিও সমান। সরকার ইতোমধ্যে প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের সব প্রকল্পে নারী-পুরুষের সমান অধিকার রাখার বিধান নিশ্চিত করেছে। সরকারের পাশাপাশি সবাই এই বিষয়ে কাজ করলে এই বৈষম্য দূর হবে।’

/এনআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
ব্রিটেনে আশ্রয় আবেদন বাতিল, বাংলাদেশিদের দ্রুত ফেরত পাঠাতে চুক্তি
ব্রিটেনে আশ্রয় আবেদন বাতিল, বাংলাদেশিদের দ্রুত ফেরত পাঠাতে চুক্তি
গাইবান্ধায় আগুনে পুড়ে ছাই ১০ দোকান
গাইবান্ধায় আগুনে পুড়ে ছাই ১০ দোকান
আজ বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস
আজ বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস
সর্বাধিক পঠিত
সিলেটে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
সিলেটে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
ফুল দিয়ে বরণ, রিট দিয়ে শুরু কোন্দল!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিফুল দিয়ে বরণ, রিট দিয়ে শুরু কোন্দল!
জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত্ত করা হয়
জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত্ত করা হয়
এমপিও আবেদন সরাসরি অধিদফতরে পাঠানো যাবে না
এমপিও আবেদন সরাসরি অধিদফতরে পাঠানো যাবে না
এডিপি: সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে যে ১০ প্রকল্প
এডিপি: সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে যে ১০ প্রকল্প