X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

পোড়া ভিটায় তৈরি হচ্ছে নতুন ঘর

জিয়াউল হক, রাঙামাটি
১৭ আগস্ট ২০১৮, ১৩:২৪আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০১৮, ১৩:২৭

লংগদুতে অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে ঘর রাঙামাটির লংগদুতে অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়িদের জন্য তৈরি হচ্ছে নতুন ঘর। দুটি বর্ষা ও একটি শীত মৌসুম খোলা আকাশের নিচে কাটিয়ে অবশেষে মাথার ওপর ছাউনির দেখা পেতে যাচ্ছেন তারা। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে এখন তাদের পোড়া ভিটায় তৈরি হচ্ছে নতুন ঘর। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘর নির্মাণের কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন। ঠিকাদাররা জানিয়েছেন, আড়াই মাসে এই পর্যন্ত ৩৫ ভাগ কাজ হয়েছে।

গত ১ জুন সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ১৭৬টি ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মোট পাঁচ জন ঠিকাদার ঘর তৈরির কাজ পেয়েছেন।

লংগদু উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আশা করছি, আগামী নভেম্বর অথবা ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবো। যাতে আগামী শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে তারা যাতে নতুন বাড়িতে উঠতে পারেন সেইভাবে কাজ করতে ঠিকাদারদের বলা হয়েছে। কাজের সুবিধার জন্য একটি রানিং বিলেরও ব্যবস্থা করেছি, যাতে ঠিকাদাররা কাজটি দ্রুত শেষ করতে পারেন।’

বাড়িঘর নির্মাণের কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান কেবল নেটওয়ার্কের স্বত্বাধিকারী রিপন দাশ বলেন, ‘আমরা দুটি প্যাকেজে মোট ৬০টি ঘর নির্মাণের কাজ পেয়েছি। এর মধ্যে ৪৫টির কাজ শুরু করেছি। যার মধ্যে ২৫টির কাজ ৫০ ভাগ হয়েছে। বাকিগুলো ৩০-৩৫ ভাগ হয়েছে। নির্মাণ শ্রমিক কম থাকায়, নির্মাণ সামগ্রীর স্বল্পতা এবং বর্ষা মৌসুম হওয়ার কারণে কাজ কিছুটা ধীরগতিতে চলছে। ওরপরও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারবো।’

লংগদু জনসংহতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত তিনটিলা গ্রামের মনি শংকর চাকমা বলেন, ‘লংগদুর ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা ছিল। একটি মহল সব সময় পার্বত্য এলাকাকে অশান্ত করার চেষ্টা করে। সেই চেষ্টার বলি আমাদের হতে হয়েছিল। তারপরও শেষ পর্যন্ত বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আমরা চাই দ্রুত সময়ে বাড়ি-ঘর নির্মাণ শেষ হলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসবে।’

লংগদুতে অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে ঘর লংগদু ইউনিয়ন পরিষদের চেরায়ম্যান ও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত তিনটিলা গ্রামের কুলিন মিত্র চাকমা (আদু) বলেন, ‘দেরিতে হলেও গত বছরের আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। কারণ উনার আশ্রয়ন প্রকল্প থেকে এই কাজটা করা হচ্ছে।’

আদিবাসী ফোরামের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘যাদের বাড়ি নাই, তারা সবাই কষ্টেই আছে। আমরা খবর নিয়েছি, বাড়ি নির্মাণের কাজ চলছে। আরও কিছুদিন এই কষ্ট তাদের করতে হবে। আমরা শিগগিরই লংগদুতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাব।’

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১ জুন রাঙামাটির লংগদু ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক নুরুল ইসলাম নয়নের লাশ খাগড়াছড়ির চার মাইল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। ২ জুন নিহতের লাশ নিয়ে মিছিল করে যাওয়ার পথে তিনটি গ্রামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। মোট ২১৩ ঘর আগুনে ধ্বংস হয় বলে জানায় প্রশাসন। পরে সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে কয়েকবার টেন্ডার আহ্বান করেও ঘর তৈরির কাজ শুরু করা যায়নি। অবশেষে এ বছরের ১ জুন ১৭৬টি ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ঘর নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।

 

 

 

/এনআই/এফএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সারা দেশে গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট
সারা দেশে গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট
ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ও সেনাপ্রাঙ্গণ ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা সেনানিবাসে এএফআইপি ও সেনাপ্রাঙ্গণ ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
চালককে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে রিকশা ছিনতাই করতো তারা
চালককে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে রিকশা ছিনতাই করতো তারা
হলফনামায় তথ্য গোপন, ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ের মনোনয়নপত্র বাতিল
হলফনামায় তথ্য গোপন, ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ের মনোনয়নপত্র বাতিল
সর্বাধিক পঠিত
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
আজও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে
আজও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে