X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

বেড়ানোর সুযোগ পেলেন ভাসানচরের রোহিঙ্গারা

আবদুর রহমান, টেকনাফ
০২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮:১১আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ২২:৫৮

কক্সবাজারে থাকা আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেয়েছেন ভাসানচরের রোহিঙ্গারা। প্রথমবারের মতো স্বজনদের বাড়িতে ঘুরে বেড়ানোর এই সুযোগ পেলেন তারা। কক্সবাজার থেকে এক বছর আগে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) প্রতিনিধি এবং ভাসানচরের ক্যাম্প ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভাসানচর থেকে ৬৫ জনের একটি দল স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পে গেছে। 

ক্যাম্প ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আমাদের কাছে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা আবেদন করেছিলেন। আবেদনের ভিত্তিতে সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে ভাসানচরে বসবাসকারী ৬৫ জন রোহিঙ্গার একটি দল কক্সবাজারে রেখে আসা স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। যদি এই দলটি ঠিকভাবে ফিরে আসে তাহলে এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। তারা সেখানে আট দিন থাকবেন। এরপর ভাসানচরে ফিরবেন।

মঙ্গলবার সকালে নৌবাহিনীর একটি জাহাজ এসব রোহিঙ্গাকে ভাসানচর থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে যায়। সেখান থেকে দুটি বাসে তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। 

২০২০ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর শুরু হয়। এ পর্যন্ত সেখানে গেছেন প্রায় ২০ হাজার রোহিঙ্গা। ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গারা শুরু থেকেই কক্সবাজারে যাতায়াতের দাবি জানালেও সরকার এতদিন রাজি হয়নি। তবে গত ৯ অক্টোবর ভাসানচরে রোহিঙ্গা শিবির দেখভালের দায়িত্বে জাতিসংঘ যুক্ত হওয়ার পর আগের অবস্থান থেকে সরে আসে সরকার।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের অনেক স্বজন এখনও কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে রয়েছেন। তাদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার জন্য ভাসানচরে বসবাসকারীরা সরকারের কাছে আবেদন করেছিল। সব দিক বিবেচনা করে তাদের কক্সবাজার ক্যাম্পে থাকা স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিছু দিন পর রোহিঙ্গারা আবারও ভাসানচরে ফিরবেন।

কয়েক দিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর সহযোগিতায় এক বছরের মধ্যে এক লাখ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তরের লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশ সক্ষম হবে। সে লক্ষ্যে কাজ করছি আমরা।

গত অক্টোবর মাসে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় যুক্ত হয় জাতিসংঘ। এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইইউএনএইচসিআর)। 

কক্সবাজার থেকে এক বছর আগে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা হয়েছিল

চুক্তির পর নভেম্বরের শুরুতে দ্বীপটি দেখে আসে ইইউএনএইচসিআর এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) যৌথ প্রতিনিধি দল। ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের ত্রাণ সহায়তার ১৩৭ দশমিক ২৮ টন মালামাল নিয়ে নৌবাহিনীর দুটি জাহাজ ভাসানচরে যায়।

এদিকে, কক্সবাজারে থাকা স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়ার বিষয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্ত আবেগাপ্লুত করেছে ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের।

ভাসানচরে বসবাসকারী রশিদা বেগম বলেন, এখানে এসে ভেবেছিলাম আর কোনওদিন কক্সবাজারে থাকা স্বজনদের দেখতে পাবো না। কিন্তু দীর্ঘদিন পর ভাসানচর থেকে কক্সবাজারের ক্যাম্পে বসবাসকারী আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে এখান থেকে একটি দল গেছে। এটি সরকারের ভালো উদ্যোগ। আমিও কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ চেয়ে আবেদন করেছি। আশা করি এই দলটি ফিরলে আমরাও যাওয়ার সুযোগ পাবো।

রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের ক্যাম্পে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেখে অনেকে ভাসানচরে যেতে উৎসাহিত হবে বলে মনে করেছেন উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মো. রফিক।

তিনি বলেন, অনেক রোহিঙ্গা যাতায়াতের সুযোগ না থাকায় ভাসানচরে যেতে চান না। এই সুযোগটা দেখে ভাসানচরে যেতে আগ্রহী হবেন রোহিঙ্গারা।

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা টেকনাফ ও উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরগুলোতে বসবাস করছেন। তাদের বেশির ভাগই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযানের সময়ে পালিয়ে এসেছিলেন। শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

 

/এএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
৮০০ রোহিঙ্গার মাঝে ইফতারসামগ্রী বিতরণ
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ৭ জন চমেক হাসপাতালে, এক শিশুর মৃত্যু
সর্বশেষ খবর
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক